Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে গ্রামে ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে চায় না কেউ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১৫ AM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১৫ AM

bdmorning Image Preview


ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার অবহেলিত একটি গ্রামের নাম চর বানা। উপজেলায় বানা নামে রয়েছে সাতটি গ্রাম। তার মধ্যে চর বানা ছোট্ট একটি গ্রাম। গ্রামটিতে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। এজন্য শিক্ষার হার খুবই কম। নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। গ্রামীণ অবকাঠামোর সন্তোষজনক উন্নয়ন না হওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে। নানাবিধ কারণে এই গ্রামে অন্য গ্রামের কেউ নিজেদের ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিতে চায়না।

এ গ্রাম যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক দিয়ে একেবারে পিছিয়ে রয়েছে গ্রামটি। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টের অভাবে বছরের অর্ধেক সময় থাকতে হয় পানিবন্দি। শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে চলতেও নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়।

উপজেলা সদর থেকে গ্রামটির দূরত্ব মাত্র সাত কিলোমিটার। আয়তনও ছোট। ২২০টি পরিবারের বসবাস। লোকসংখ্যা হাজার দেড়েক। তবে রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত চর বানা গ্রামের বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামের প্রবেশপথে একটি ব্রিজ থাকলেও দুপাশে নেই পাকা সংযোগ সড়ক। তবে কাঁচা রাস্তা রয়েছে। তা-ও অনেক নিচুতে। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা হয়। আর অতিবৃষ্টি হলে পানিতে তলিয়ে যায়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি প্রায় পাঁচ ফুট পানির নিচে থাকে। তখন বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে উঠতে হয় ব্রিজে।

চর বানা গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামটি সব ধরনের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা এতোটাই খারাপ যে অন্য এলাকার মানুষ এ গ্রামে আত্মীয়তা পর্যন্ত করতে অনীহা প্রকাশ করেন।

গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুল আক্ষেপ করে বলেন, শুনি বাংলাদেশ ডিজিটাল। কিন্তু আমরা উন্নয়ন আর ডিজিটালের বাইরে।

নজরুল শেখ নামের গ্রামের আরেক ব্যক্তি বলেন, বর্ষায় গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারণে আমরা কষ্টে থাকি। যাতায়াতের খুব সমস্যা হয়। ঘর থেকে বের হতে হলে নৌকা ছাড়া উপায় নেই। বছরের ছয় মাস ধরে পানিবন্দি থাকতে হয়।

স্থানীয় আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় বর্ষার সময়। মানুষ চলতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এমপি সাহেব নিজে এসে পরিদর্শন করে গেছেন। শুকনো মৌসুমে রাস্তায় মাটিও দিয়েছেন। কিন্তু মাটি থাকে না।

কৃষক সোহরাব হোসেন বলেন, বছরের ছয় মাস ফসলি জমিতে পানি থাকে। তাই জমিতে ঠিকমতো ফসলও ফলাতে পারি না। আমরা খুব কষ্টে আছি।

এ ব্যাপারে বানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. রাজ ইসলাম খোকন বলেন, গতবছর রাস্তাটির কিছু অংশে মাটি দিয়ে উঁচু করা হয়েছিল। কিন্তু রাস্তাটি অনেক নিচু। যে কারণে মাটি দিয়ে কোনো কাজে আসেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে গ্রামবাসীর কষ্টের কথা জানিয়েছি। সরেজমিনে পরিদর্শনও করেছেন। রাস্তাটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান বলেন, রাস্তাটি এমপি নিজে পরিদর্শন করেছেন। আগামী শুকনো মৌসুমে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে আশা করছি।

Bootstrap Image Preview