Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল: সংঘাত এড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের মাইকিং

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২১, ১১:৩০ PM
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১, ১১:৩০ PM

bdmorning Image Preview


লাতিন আমেরিকান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই দেখতে দেখতে এখন শেষ পর্যায়ে। ১০ দলের এই টুর্নামেন্ট এখন দুই দলে পরিণত হয়েছে। এই খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘাত এড়াতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সতর্কতামূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে।

রোববার (১১ জুলাই) বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতের ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপার ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা।

এরআগে কোপা আমেরিকার ফুটবল খেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষে অন্তত: দশজন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে ও সন্ধ্যায় সদর উপজেলার দামচাইল বাজারে এ সংঘর্ষ ঘটে। জখমদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘাতের পর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেলা শহর ও উপজেলায় অটোরিকশা, সিএনজি ও পিকআপ যোগে মাইকিং করা হচ্ছে।

যদিও আর্জেন্টিনার দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। তবে বাংলাদেশে যে আর্জেন্টিনার পাড়ভক্তের সংখ্যা অগণিত সে সম্পর্কে অবগত আছেন সেই দূতাবাসের কর্মকর্তারা।বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উন্মাদনা সম্পর্কে তারা জানেন। আর তাই আর্জেন্টাইন দূতাবাসের কর্মকর্তারা ফাইনালে আর্জেন্টিনা দলের জন্য বাংলাদেশের আকুণ্ঠ সমর্থন চেয়েছেন।

এ বিষয়ে দিল্লির আর্জেন্টাইন দূতাবাস থেকে একটি প্রেস নোট এসেছে বাংলাদেশের এক গণমাধ্যমে। সেখানে তারা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিকবৃন্দকে আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে। আমরা জানি, বাংলাদেশে অসংখ্য আর্জেন্টাইন সমর্থক আছেন। মেসি ও নেইমারের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন তারা।

আর্জেন্টাইন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের শুভেচ্ছা। অনুগ্রহ করে, উপভোগ করবেন দুর্দান্ত এই ফাইনাল খেলা। আমরা ফুটবল ভালোবাসি। এর উত্তেজনা ও সৌন্দর্য্যের চূড়ান্ত বিকাশে বিশ্বাসী। সারা বিশ্ববাসী এখন সুপার ক্ল্যাসিকোর ফাইনাল ম্যাচ মাঠে দেখবে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, এই খেলা নিয়ে এরইমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছে। তাই জেলা পুলিশ থেকে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থার নেয়া হচ্ছে। খেলা কোনো ক্লাবে বা চায়ের দোকানে দেখার আয়োজন না করা হয়, তা আমরা মাইকিং করে জানিয়ে দিচ্ছি।

ফাইনাল খেলার দিন ভোর ৫টা থেকে মাঠে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। এছাড়া জেলার ১১৬টি বিটে চারজন করে কাজ করবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। খেলা শেষ হওয়ার পর কোনো অবস্থাতেই বিজয় মিছিল করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৬ জুলাই) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের দামচাইল বাজারে নোয়াব মিয়া (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন আর্জেন্টিনা সমর্থক জীবন ও তার সহযোগীরা। ওইদিন সকালে নোয়াব মিয়ার ভাতিজা ব্রাজিল সমর্থক রেজাউলের সঙ্গে খেলা নিয়ে জীবনের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে জীবন ও তার সহযোগীরা রেজাউলের চাচাকে একা পেয়ে মারধর করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন রাতেই জীবনের সহযোগী তিন আর্জেন্টিনা সমর্থককে মারধর করেন ব্রাজিল সমর্থকরা।

বাংলাদেশ থেকে অদূরে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলেও দেশে দুই দলের সমর্থকদের এমন সংঘাতে দেশীয় ফুটবল বোদ্ধারা হতবাক। ফুটবল বোদ্ধা ও খেলা প্রেমিকদের মতে, খেলায় জয়-পরাজয় থাকবেই। তবে তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ানোর মতো কিছু নেই। দর্শক কেবলই তা উপভোগ করবে। জয়-পরাজয় নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে, তবে তা দ্বন্দ্বে জড়ানো কাম্য নয়।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হতে থাকে, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচে সংঘাত রুখতে পুলিশের বিশেষ টিম’ দায়িত্ব পালন করবে। এমন সংবাদে বার্তা-সংস্থা এএফপির সূত্রে আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেস টাইমস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এ খবরটি প্রকাশ করে।

আর্জেন্টিনার গণমাধ্যমে বলা হয়, কোপা আমেরিকা ফাইনালের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে জনসমাগম নিষেধ করেছে পুলিশ। স্থানীয় সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview