Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লাইভে এসে পরীমনিকে নিয়ে অশীল বক্তব্য দিলেন পরিচালক সোহানুর রহমান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২১, ০৪:৩২ PM
আপডেট: ১৫ জুন ২০২১, ০৪:৩২ PM

bdmorning Image Preview


গত ৯ জুন উত্তরা বোট ক্লাবের পরিচালক নাসির ইউ মাহমুদ ও ব্যবসায়ী অমি পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা করার চেষ্টা করে। ১৩ জুন পরীমণি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি লেখেন। পরে সেদিন রাত ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ করেন। ১৪ জুন তিনি সাভার থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অমি, নাসিরসহ তিন নারীকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে ঘটনাটি নিয়ে একাত্তর টিভির ‘একাত্তর জার্নাল’ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। উপস্থাপকের এক প্রশ্নের জবাবে মিশা সওদাগর বলেন, পরীমণি তার ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু সমিতিকে জানাননি। ফলে ঘটনার বিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না।

অপরদিকে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘পরীমণি আমাদের কিছু জানাননি। ফলে আমরা কিন্তু গায়ে পড়ে কোথাও যাই না। আমাদের জানালে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।’

তিনি পরীমণির ঘটনা নিয়ে বলেন, ‘পরীমণি অহরহ রাত ১২টার পর বের হন। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা তিনি মাঝে মাঝেই ঘটান। পরীমণির জন্য এটা নরমাল বিষয়। কিন্তু এই ব্যাপারটা অনেক বেশি সিরিয়াস হয়েছে। এই সিরিয়াস ব্যাপার তার উচিত ছিল আমাদের জানানো। আমাদের জানালে ব্যবস্থা নিতাম। আমাদের কিছু জানায়নি। সে নিজে নিজেই প্রেস কনফারেন্স করেছে। আমরা যেহেতু জানি না তাই ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তবে আমরা পরীমণির সঙ্গেই আছি।’

সোহানের এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা। ড. নাসির উদ্দিন সোহানের কথার প্রতিবাদ জানিয়ে মন্তব্য করেন।  

মিথিলা ফারজানা বলেন, ‘পরীমণি বলেছিলেন, নায়িকা হওয়ার কারণে মানুষ আমাদের একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। আপনারা তো নিজেরাই তাকে অন্য চোখে দেখেন। তার সম্পর্কে ন্যূনতম শ্রদ্ধাটুকুও আপনাদের মাঝে নেই। আপনারাই যখন সম্মান দিতে জানেন না তখন বাইরের মানুষ কীভাবে সম্মান দেবে।’

ড. নাসির বলেন, ‘তাহলে ওনার বক্তব্য থেকে মানুষ কী বার্তা পাচ্ছে? জবাবে মিথিলা ফারজানা বলেন, ‘এই বার্তায় পাচ্ছে চলচ্চিত্রের মানুষ নিজেরাই নিজেদের সম্মান দিতে জানেন না।’

উল্লেখ্য, দেশের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে তিনজন নারী রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফূর্তির জন্য মাসিক টাকা দিয়ে নারীদের রাখতেন নাসির উদ্দিন মাহমুদ।

সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

নাসির উদ্দিন ও অমি ছাড়া গ্রেপ্তার অন্য তিন নারী হলেন, লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, এটা অমির বাসা। পরীমণির সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে নাসির তার তিন রক্ষিতাকে নিয়ে এ বাসায় পালিয়ে ছিলেন। মাদক রাখার অভিযোগে সে তিনজনকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি। 

ওই বাসাটিতে অভিযান পরিচালনার সময় বিভিন্ন ব্যান্ডের বিদেশি মদ-বিয়ার ও ১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে গ্রেপ্তার মেয়েদের দেখানো জায়গা থেকে এসব মাদক উদ্ধার করা হয়।

নাসির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নাসিরের বিরুদ্ধে আগেও মাদক ও নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে। নানা অভিযোগে তাকে উত্তরা ক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জেনেছি। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমরা সেগুলোর তদন্ত করব।

পরীমণি ক্লাবের সদস্য না হয়ে সেখানে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম কমিশনার বলেন, সে (পরীমণি) স্বনামধন্য নায়িকা। ওখানে (বোট ক্লাব) যেতেই পারেন। গেলে যে তাকে ওখানে হ্যারেজ (হয়রানি) করবে সেটা ঠিক না। আসলে কী ঘটেছে তা বিস্তারিত তদন্ত করে বলতে পারব।

তিনি বলেন, এই ঘটনা নিয়ে রবিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমণি। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আমরা অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, তবে যেহেতু রাতে মামলা হয়নি, তাই আমরা অ্যাকশনে যাইনি। সাভার থানায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। 

হত্যাচেষ্টা ও ধর্ষণচেষ্টার মামলায় নাসিরকে সাভার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে বর্তমানে মাদক উদ্ধারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান হারুন।

শনিবার পরীমনি যে অভিযোগ করেছিলেন, সেটি থানায় আমলে নেওয়া হয়নি– এই বিষয়ে কী করবেন জানতে চাইলে হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘আমরা পরীমনির সঙ্গে কথা বলব। আমরা প্রতিটি অভিযোগকে খতিয়ে দেখছি।

Bootstrap Image Preview