Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী, কেন হয় এবং এর চিকিৎসা কী?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২১, ১১:১৩ AM
আপডেট: ২৮ মে ২০২১, ১১:১৩ AM

bdmorning Image Preview


‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ নতুন কোনো রোগ নয়, এটি প্রায় একশ’ বছরের পুরোনো ছত্রাকজনিত রোগ। দেশে প্রতি বছরই অল্প কিছু মানুষ বিরল এই রোগ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসসহ নানা কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। নাক দিয়ে রক্ত পড়া, চোখে ঘোলা দেখা, মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হওয়াসহ শরীরে কালোদাগ দেখা দেয়া ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে’ আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ।

মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সর্বত্র বিরাজমান। চিকিৎসকরা বলছেন মাটি, গাছপালা, সার বা পচনশীল ফল ও সবজির মধ্যে এটি থাকতে পারে। সব মানুষ এতে আক্রান্ত হয়ও না।

বিএসএমএমইউ’র মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইমিউনলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ বলেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শত বছরের পুরোনো। এটি সাধারণত মানুষকে সংক্রমিত করে না। এটি প্রকৃতিতে প্রচুর রয়েছে কিন্তু আমরা সচরাচর সংক্রমিত হই না। এটি মাটিতে থাকে ও পচনশীল সব জৈব পদার্থেই থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য মতে, জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা স্টেরয়েড ওষুধ গ্রহণের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া ব্যক্তিদের এই ছত্রাকে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। প্রকৃতিতে থাকা এই ছত্রাক নাক দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে সাইনাসে এবং ফুসফুসে ঢুকতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তির শরীরে কাটা ছেরা, পোড়া বা চামড়ায় ক্ষত থাকলে সেখানেও সংক্রমিত হতে পারে।

বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরী মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস যদি থাকে। অন্য কোনো কারণে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাদের এই রোগ সংক্রমিত করতে পারে। করোনা যেমন ছোঁয়াচে, তবে এটা কিন্তু একজনের থেকে অন্যজনের কাছে যাবে না।

বিএসএমএমইউ’র মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইমিউনলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ বলেন, নাক দিয়ে কালো রক্ত পরা, চোখে ব্যথা করা বা চোখ ফুলে যাওয়া, মস্তিষ্কে প্রবেশের পর মাথা ঘুরানোর মতো বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। এসব দেখা গেলে যেন মানুষ দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ২০ লাখ মানুষের মধ্যে দু’জন এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়ে থাকেন। রোগটি ছোঁয়াচেও নয়। দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস পরীক্ষার সুযোগ আছে এবং মাঝে মধ্যে শনাক্তও হয়ে থাকে।

তবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি। তাই বিরল এই রোগে আক্রান্তদের সরকারি খরচে চিকিৎসার দাবি বিশেষজ্ঞদের।

ইনজেকশন আছে। কারো কারো ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। যেহেতু চিকিৎসা ব্যয়বহুল। যাদের এটা হয় তাদের এর সঙ্গে অন্যান্য রোগও থাকে। তাই মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। প্রতিদিন ৭৬ হাজার টাকা শুধু ইনজেকশনের খরচ।

মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে বাঁচতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, স্যাঁতস্যাঁত ও ময়লা আবর্জনার মধ্যে খালি পায়ে না হাঁটা এবং সব সময় আলো বাতাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

Bootstrap Image Preview