Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সোশ্যাল মিডিয়া ঘৃণা প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে : ফারুকী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২১, ০৩:১১ PM
আপডেট: ১৬ মে ২০২১, ০৩:১১ PM

bdmorning Image Preview


ফেইসবুক, টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোঘৃণা প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ‘টেলিভিশন’ নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শুধু বাংলাদেশ নয়; গোটা পৃথিবীর অবস্থাই এমন বলে মনে করেন তিনি।

‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশো-তে স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে নিয়ে হাজির হন এই নির্মাতা।

বাংলাদেশ কি সাম্প্রদায়িক হয়ে উঠছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুকী বলেন, ‘সারা বিশ্বেই চরমপন্থার জয়জয়কার। চরমপন্থার প্রচুর চাষাবাদ হচ্ছে। এর পেছনে ঘি ঢালছে সোশাল মিডিয়া। হেট্রেড (ঘৃণা) আগেও ছিল সমাজে। কিন্তু ঘৃণা এবং ভালোবাসা এটা এমন এক জিনিস যা প্রকাশে বাড়ে, অপ্রকাশে স্তিমিত হয়ে আসে। সোশ্যাল মিডিয়া এটা আমাদের যত্রতত্র যখন তখন প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে আমরা ঘৃণার প্রসার এবং প্রচার অনেক বেশি দেখতে পাচ্ছি।....এই যে চরমপন্থা, চরম ঘৃণা এটা শুধু বাংলাদেশেরই একার সম্পত্তি নয়, এটা বিশ্ব মানবসভ্যতার ঐতিহ্য।  ফলে সবাই একই দোষে দুষ্ট।’

তার সঙ্গে একমত অভিনেত্রী তিশাও। ফেইসবুকে তার নিজের পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ৪৩ লাখ। তবে তার অনুসারীরা প্রশংসার পাশাপাশি কাজের ভুল ধরিয়ে দেন বলে জানান তিশা, যা তিনি দেখেন ইতিবাচক হিসেবে।

‘অনেক পেজে আমি দেখেছি, যাদের অনেক সমালোচনা হয়, খারাপ খারাপ কমেন্ট আসে, যেটা খারাপ, যেটা এক ধরনের চাপ। ছোট অনুভূতি হয়, মাঝে মাঝে খুবই খারাপ লাগে। ...যেটাতে অনেক সময় আপসেট হয়ে যায় মানুষ। ...আগেও যখন আমরা কাজ করতাম. মানুষ অ্যাপ্রেশিয়েট করতো, খারাপ লাগলে বলতো। কিন্তু সেটা এত ওপেন ছিল না। এখন মনে হচ্ছে সবার হাতেই কলম। সবার হাতেই টাইপ রাইটার। খারাপ লাগলো সাথে সাথেই বলে দিলো,’’ বলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই শিল্পী।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এগুতে পারছে না বলে মনে করেন ফারুকী। এর দায় চলচ্চিত্রকার বা দর্শকদের নয়, পুরোটাই দিচ্ছেন নীতিনির্ধারকদের।

ফারুকীর যুক্তি, ‘‘ধরা যাক আমার ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটা আটকে দেয়া হয়েছে। এখনও আটকে আছে। ‘শনিবার বিকেল’ আটকানোর মাধ্যমে আপনি শুধু একজন ফারুকীকে আটকাননি, ফারুকীর মতো আর যারা আছে সিনেমা বানাবে, যারা স্ক্রিপ্ট রাইটিং টেবিলে আছে, তারা টেবিলে বসে আতঙ্কে আছে, তারা একটি দৃশ্য লেখার আগে ভাবে আমি কি এটা বলতে পারবো, নাকি পারবো না। এই সেন্সরশিপ যখন থাকে, তখন নেটফ্লিক, অ্যামাজন শুনতে অনেক ভালো লাগে, কিন্তু ওদের সাথে কমপিট করার জন্য ওদের ওখানে যে পলিটিক্যাল ফ্রিডমটা তারা পায় বানাতে, সেটা কি আমাদের আছে? সেটা যদি না থাকে তাহলে সম্ভাবনা আশা করাটা ঠিক না।’’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে বাংলাদশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন ভারতের পরিচালক শ্যাম বেনেগল। এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাছে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকেউ বানাতে পারেন, যদি যথাযথ গবেষণা করে বানানো হয়।’

কিন্তু ভারতের কাউকে দিয়ে বানানোর ক্ষেত্রে তার আপত্তি আছে। এ আপত্তির বিষয়টি তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক আয়োজনে বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ফারুকী বলেন, ‘যেহেতু বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের অভিযোগ প্রোপাগান্ডা যা-ই বলেন, সেটা হলো বঙ্গবন্ধু ভারতের দ্বারা তৈরি করা একজন নেতা, ভারত পাকিস্তানকে ভাঙার জন্য বঙ্গবন্ধুকে তৈরি করেছে। এটা হচ্ছে প্রো-পাকিস্তান প্রোপাগান্ডার একটা অংশ। যখন এরকম একটা প্রোপাগান্ডা সমাজে চালু আছে, যেই প্রোপাগান্ডার ভেতরে আমি আমার স্কুলজীবন পার করেছি, পরে যৌবনে যখন সেটা ভেঙে আমরা বেরিয়ে আসলাম, এখন এসে যখন দেখি বঙ্গবন্ধুর জীবনী বা ইমেজ বানানোর দায়িত্বটা ভারতের একজন ফিল্মমেকারকে দেয়া হয়, আমি তখন ওই মিটিংয়ে বলেছিলাম, তখনকি আমরা অজান্তেই ঐ প্রোপাগান্ডাটার হাতে যুক্তি তুলে দেই কী-না। এটা আমি তাদেরকে বিবেচনা করতে বলেছিলাম।’

তবে এই চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিশা। তিনি জানান, শ্যাম বেনেগলের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। এত বড় মাপের চলচ্চিত্রকারের সঙ্গে এবং এমন চরিত্রে কাজ করতে পেরে খুব আনন্দিত বলেও জানান তিশা।

Bootstrap Image Preview