আল জাজিরা, বার্তা সংস্থা এপি, এএফপিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় ধ্বংসে যে বহুতল ভবনটিতে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল, সেখানে ঈদ উদযাপন করছিল মোহাম্মদ হাদিদির পরিবার।
শনিবারের হামলায় ওই পরিবারের আটজন নিহত হয়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হামলার পর ভবন থেকে আট ভাই-বোনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে কেবল পাঁচ মাসের শিশু ওমরকে।
ওমরের বাবা মোহাম্মদ হাদিদি জানান, ঈদ উপলক্ষে ভবনটিতে ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তার স্ত্রী ও পাঁচ ছেলে। মামাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলতে সেখানেই থেকে যেতে চেয়েছিল শিশু সন্তানরা। মা-ও রাজি হয়েছিলেন। এই খেলতে চাওয়াই শেষ পর্যন্ত হলো কাল।
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতরে শিশুদের খেলনা, নানা রকম খাবারের সাজানো টেবিল খুঁজে পেয়েছেন।
প্রকাশ্য দিবালোকে আল জালালা টাওয়ারে এ হামলা থেকে ওমর বেঁচে গেলেও প্রাণ গেছে হাদিদির স্ত্রী-সন্তানসহ ১০ জনের।
হামলাটি সরাসরি সম্প্রচার করা এপি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ অঞ্চলের ভেতরকার পরিস্থিতি প্রকাশ বন্ধ করতেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এ আগ্রাসন। এর ফলে গাজার প্রকৃত পরিস্থিতি আরও কম জানবে বিশ্ব।
হামলার এক ঘণ্টা আগে ভবনের মালিককে বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্ক করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
এএফপি জানিয়েছে, ভবন খালি করার জন্য আরও ১০ মিনিট সময় বেশি দেয়ার অনুরোধ করা হলেও তা রক্ষা করেনি সেনাবাহিনী।
আল জাজিরার সাংবাদিক সাফওয়ান আল কাহালুত জানান, খবর পেয়েই তিনি ও তার সহকর্মীরা ব্যক্তিগত ও অফিসের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, বিশেষ করে ক্যামেরা নিয়ে ভবন থেকে বের হয়ে যান।
শনিবার ছিল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের সংঘাতের ষষ্ঠ দিন।
দিনটি ছিল ফিলিস্তিনের জন্য ‘মহাদুর্যোগের দিন’ হিসেবে পরিচিত নাকবা দিবস। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থার বিলোপ এবং সাত লাখের বেশি ফিলিস্তিনির স্থায়ীভাবে রাষ্ট্রহীন হওয়ার কালো দিন এটি।
প্রতিবছর ১৫ মে নাকবা দিবসকে কেন্দ্র করে উত্তাপ বাড়ে অঞ্চলটিতে।