Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্ত্রীর সাথে তুললে গালি , মায়ের সাথে তুললেও গালি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১, ০৫:৫১ PM
আপডেট: ১১ মে ২০২১, ০৫:৫১ PM

bdmorning Image Preview


আব্দুন নূর তুষার।।

চঞ্চল চৌধুরী কি প্রথম ব্যক্তি যিনি এভাবে কুৎসিত ভাষায় ফেসবুকে আক্রান্ত হয়েছেন?

ভাবনা কি প্রথম মেয়ে যে এভাবে ফেসবুকে আক্রান্ত হয়েছে?

এটা প্রথম না। শেষও না।

এখানে একদল বিকৃত রূচির অন্ধ মানুষ আছেন যারা তাদের মতের সাথে বা পথের সাথে সামান্য অমিল হলেই ঝাপিয়ে পড়েন তাদের নিজেদের মায়ের ভাষায় । সে ভাষা শ্রবন অযোগ্য, লেখারও অযোগ্য। তারা কুৎসিত গালিগুলিকে সামান্য কয়েকটা বর্ণ বদলে দিয়ে ব্যবহার করেন যাতে মানুষ বোঝে যে কি বলা হচ্ছে। শুনলে মনে হয় গালি কিন্তু লিখেছে অন্যভাবে।

এই কাজ গুলি কারা করে?

এই কুকথা বলার চল কারা শুরু করেছিল? কবে করেছিলো?

এরকম কি একদিনই হলো নাকি আগেও হয়েছে?

এরকম রোজ হয়। কেউ না কেউ কোথাও না কোথাও আক্রান্ত হয়। এক মা ছেলেকে হিজাব পরে ক্রিকেট খেলা শেখানোর সময় ছবি পোস্ট হয়ে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন।

সাকিব আর শিশির কে, নাসিরের বোনকে, মুশফিককে বাজে কথা বলা হয়েছে।

ন্যান্সিকে, আঁখীকে। কাকে না?

এরকম অনেক।

সাধারন মানুষদের কথা নাই বললাম। সাইবারবুলিইয়িং করা এখন নিত্য দিনের বিষয়। ভদ্রতা সভ্যতা কোন কিছুর বালাই নাই। পাবলিক গ্রুপে ও পেজে আজে বাজে কমেন্ট রোজকার বিষয়।

তার মানে কি?

মানে হলো এই সমাজটাই আমাদের সমাজ। এই জঘন্য লোকগুলিই আমাদের সমাজে টিকে থাকে কারণ আমরা তাদের কিছু বলি না। তাদের বাবা মা ভাই বোন বন্ধু স্বামী স্ত্রী প্রেমিক প্রেমিকা সহকর্মী তারা তাদের কিছু বলেন না। তারা কেউ না কেউ তো জানেন যে এই গুয়ের চেয়ে অধিক লোকগুলি কি ধরনের দুর্গন্ধ ছড়ায় নেট জগতে।

কিন্তু তারা জেনেও না জানার, দেখেও না দেখার ভান করেন।

যারা এগুলো করে তারা কোন সামাজিক ন্যায়নীতির ধার ধারে না। এরা সাইকোপ্যাথ। এদের আনন্দ গু ঘেটে। কোপ্রোফ্যাজিয়া বলে একটা অসুখ আছে, এরা পঁচা গলা গু খায়। এই লোকগুলি সেই রকম গু ভক্ত।

এরা মায়ের সাথে সন্তানকে দেখে না। এরা দেখে নারী ও পুরুষ। এরা দেখে পোষাক। এরা দেখে ধর্ম। এরা দেখে রাজনীতি।

তাই হিজাব পরে ক্রিকেট খেললে গালাগাল। ব্লাউজ এর গলা বড় হলেও গালাগাল।

পাজামা টাকনুর ওপরে পরলেও গালাগাল, জোব্বা পরলেও গালাগাল। হাফপ্যান্ট পরলেও গালাগাল।

বোনের সাথে ছবি তুললে গালি, স্ত্রীর সাথে তুললে গালি , মায়ের সাথে তুললেও গালি।

কিছু মেয়ে হালাল রুজি করে , নেটে লাইভে এসে জামা প্রসাধনী শাড়ী গয়না এরকম নানান কিছু প্রোমোট করে। এরা তাদের ওখানেও গিয়ে বাজে কথা বলে। তাদের লাইভ রিপোর্ট করে মুছে দেয়। এরা সংঘবদ্ধ শয়তানের দল।

নানা রকম চেতনার নামে, সিপি জিপি সাইবার সেনা হয়ে এরা গালির মহোৎসব করে। এদের মুখের ছিপি খুললেই ভকভক করে বের হয়ে আসে ভেতরের দুর্গন্ধ।

এরা সাইবার জগতে আজকের যুগের আলবদর আলশামস রাজাকার এর প্রতিচ্ছবি, সাইবদর সাইবারশামস সাইরাজাকার।

এদের ঘৃণা করেন।

এদের প্রতিহত করেন।

এদের দলমত নির্বিশেষে নিন্দা করেন।

প্রয়োজনে এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেন।

যারা এগুলো করে তারা আপনাদের আশেপাশে থাকলে সবার সামনে বলেন যে সে এরকম রুচিহীণ। এদেরকে ফেসবুকে বা সাইবার জগতে ভারচুয়ালি না, বরং রিয়ালিটি বা বাস্তবে পদাঘাত করেন।

যারা এদের বন্ধু তালিকায় আছেন তারাও নির্লজ্জ। তারা জেনেশুনে এদের সাথে সম্পর্ক রাখেন। অথবা এরাও একই রকম মানসিক রোগাক্রান্ত।

কোন কোন পুরুষকে দেখলাম সিঁদুর দিয়ে ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ করছেন।

মাথায় সিঁদুর মেখে এসব রোমান্টিসিজম করে কোন লাভ নেই।

নিজের পক্ষ পরের পক্ষ বিবেচনায় নেয়া যাবে না। কাউকেই এরকম কুৎসিত ভাষা ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না।

আগে এদের বিরুদ্ধে বলেন নাই। যখন নিজের দলের লোক জিভ শান দিয়েছে গালাগাল করে।

এখন সবাই আক্রান্ত। ভেদ বিচার নাই। এখন কেউ বাদ পড়ছে না।

আসেন এদের জনসমক্ষে প্রতিহত করি। এদের নিজেদের জীবন থেকে বাদ দেই।

না হলে এরকম চলতেই থাকবে।

লেখক- ডা. আব্দুন নূর তুষার টেলিভিশন-উপস্থাপক।

Bootstrap Image Preview