Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মে ২০২১, ০২:১৪ PM
আপডেট: ০৫ মে ২০২১, ০২:১৪ PM

bdmorning Image Preview


করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবীরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে যানবাহন পেলেও বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

রাজধানীর উত্তরায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিপণনের কাজ করেন রহিম। থাকেন মিরপুরে। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় পণ্য নিয়ে যেতে হয় তাকে। ব্যক্তিগত পরিবহন না থাকায় লকডাউনে তার ভরসা সিএনজি অটোরিকশা, ভাড়ার মোটরসাইকেল কিংবা গাড়ি। চলমান লকডাউনের আগে যাতায়াত বাবদ প্রতিদিন তার খরচ হতো ১০০ টাকা। এখন সেই খরচ বেড়েছে চার থেকে পাঁচগুণ।

বুধবার (৫ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অফিসগামী যাত্রীদের এই দুরাবস্থা চোখে পড়ে। ভোগান্তি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গণপরিবহন খুলে দেয়ার আর্জি জানিয়েছেন তারা।

 প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশ টাকা শুধু যাতায়াতেই খরচ হচ্ছে। অফিস থেকে সামান্য কিছু টাকা যাতায়াত ভাতা দিচ্ছে। তবে অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে গাজীপুর, সাভারেও যেতে হচ্ছে। এতে নিজের পকেট থেকেই অনেক টাকা চলে যাচ্ছে।’

আরও বলেন, ‘এখন আমরা অসহায়। কিছু করার নেই। গাড়ি ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছি না।’

মিরপুর মানিকদী থেকে বনানী পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন আরেক বেসরকারি অফিসের কর্মচারী সাইদুল। গন্তব্য মহাখালী। তিনি বলেন, ‘বনানী ১১ থেকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে যাব মোটরসাইকেলে। কিন্তু ভাড়া ২০০ টাকা বলছে। ১০০ টাকা বলেছি, তাও যেতে রাজি নয়। এইভাবে অন্তত ১০ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে কর্মক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে।’

মিরপুর কালশী মোড়ে একাধিক মাইক্রোবাস, ব্যক্তিগত গাড়িতে করে উত্তরার যাত্রী তুলতে দেখা যায় এদিন। যাত্রীপ্রতি তারা ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলোও যাত্রী পরিবহন করছে বিভিন্ন সড়কে। একই গন্তব্যের একাধিক যাত্রী নিয়ে এসব গাড়িকে চলাচল করতে দেখা গেলেও, পথে কোনো ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যায়নি। চালকরা বলছেন, ‘ম্যানেজ’ করেই তারা সড়কে চলাচল করছেন।

চাকরিজীবী মোহাম্মদ শামছুল আলম বলেন, ‘অফিসের কাজে বের হচ্ছি কিন্তু গাড়ি পাচ্ছি না। মিরপুর থেকে আব্দুল্লাহপুর ১০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। লকডাউনের প্রথমে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিসে গিয়েছি। কিন্তু এখন সেটা আরও বেড়ে গেছে।’

এদিকে অপরিচিত যাত্রীদের সঙ্গে ছোট ছোট যানবাহনে চলাচলে স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি মেনেই যাত্রীরা যাতায়াত করছেন।

বুধবার সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যানের ভিড় দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি ক্রসিং, ফ্লাইওভারে ছিল গাড়ির দীর্ঘ সারি। ফ্লাইওভারের ওপরে ছিল থেমে থেমে যানজট। যারা অফিসে যাওয়ার জন্য কোনো পরিবহন পাননি তাদের ফুটপাতে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করতে দেখা গেছে।

যাত্রীরা বলছেন, ‘এটা লকডাউন নয়, মনে হচ্ছে বাস ধর্মঘট।’

কালশী মোড়ে অফিসগামী যাত্রী মেহেদী হাসান দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলেন ভাড়ার মোটরসাইকেলের জন্য।তিনি বলেন, ‘পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নাই। অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি সিএনজি বা ভাড়ায় মোটরসাইকেল পাচ্ছি না। মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে। যেখানে ৫০ টাকা ভাড়া সেখানে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার নিচে যাওয়া যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেয়ার করে সিএনজি কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে হচ্ছে। সেখানে নিরাপত্তার একটা ব্যাপার তো রয়েছেই। তবে আমাদের কিছু করার নেই। গাড়ির নাম্বার প্লেট দেখে সেটা মনে রেখে কিংবা প্রিয়জনকে মেসেজ করে এখন চলতে হচ্ছে।’

 

Bootstrap Image Preview