Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাজেটে সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধির দাবি সংসদ সদস্যবৃন্দের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ মে ২০২১, ০৮:২৫ PM
আপডেট: ০৪ মে ২০২১, ০৮:২৫ PM

bdmorning Image Preview


কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বাড়তি রাজস্ব আয় অর্জন এবং তামাক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেশের তরুণ নারী-পুরুষদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে, আসন্ন বাজেট ২০২১-২২ এ সিগারেটের স্তরভিত্তিক করকাঠামো বাতিল করে ও সকল স্তরের সিগারেটে সুনির্দিষ্ট করারপের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধির দাবি তুলে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সংসদ সদস্যবৃন্দরা।

আজ মঙ্গলবার, ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ – এর আয়োজনে ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘আসন্ন জাতীয় বাজেটে তামাকপণ্যে করারোপ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এসব আলোচনা উঠে আসে।

ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত, এমপি’র সভাপতিত্বে এই ভার্চুয়াল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আফম রুহুল হক, এমপি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।  

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনার মাধ্যমে আসন্ন বাজেটে তামাকের উপর সুনির্দিষ্ট কর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো, সকল স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করা, বিশেষ করে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য কার্যকরভাবে বাড়ানো হবে এবং সমন্বয় করে সবগুলোর খুচরা মূল্য বৃদ্ধি করা এবং ৫ বছর মেয়াদী কার্যকরী তামাক কর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে তামাকের ব্যবহার হ্রাস ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা।

এগুলো বাস্তবায়িত হলে সরকার অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে পারবে। প্রায় ৮ লাখ তরুণকে নতুন করে ধূমপায়ী হওয়া থেকে বিরত রাখা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও তামাক নিয়ন্ত্রণে ফোরামের নানান উদ্যোগ নিয়ে একটি উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ। সেখানে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট ১৫৩ মাননীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ, তামাক আইন সংশোধনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট ১৫২ সংসদ সদস্যের সুপারিশ এবং তামাকের উপর উচ্চ করারোপের দাবিতে ৫২ সংসদ সদস্যের সুপারিশের বিষয়গুলো উঠে আসে।

এ বিষয়ে প্রধান অতিথি ডেপুটি স্পিকার জনাব ফজলে রাব্বি মিয়া, এমপি বলেন, ‘আপনারা মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছেন। শুধু এতেই কাজ হবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং ফোরামের সবাই যদি যৌথভাবে অর্থমন্ত্রীকে বুঝাতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন, কিন্তু এড়িয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। তাকে বলতে হবে, প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্টকে আপনি সমর্থন করেন কিনা। আপনারা অর্থমন্ত্রীর সাথে কথা বলুন। তাহলে আপনারা সফল হবেন। তামাকের উপর আপনাদের সুনির্দিষ্ট করারোপের এই উদ্যোগ সফল হোক।’

অধ্যাপক ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক বলেন, ‘আমরা অনেকদিন ধরেই তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছি। বাংলাদেশের অনেক সংস্থা তামাকের বিরুদ্ধে কাজ করছে। যারা তামাক উৎপাদন ও ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা শক্তিশালী গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধে কাজ করতে গেলে আমাদের বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে হবে। বাজেটে তামাকের উপর কর বৃদ্ধি করলে এর ব্যবহার কিছুটা কমবে।’

আসন্ন বাজেটে তামাকের কর বৃদ্ধির বিষয়ে সংসদ সদস্যদের সাথে একমত হয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান জনাব আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর মূল্য বৃদ্ধি করে তামাক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এটি কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে জরিপ করা দরকার। ট্যারিফ ও ট্যক্স বৃদ্ধির মাধ্যে কতটা সুফল আমরা পাচ্ছি, তার কোন জরিপ আমরা এখনও করতে পারিনি। আপনারা যারা তামাক নিয়ে কাজ করেন তারা এই মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে কতটা ফল আসছে, সে বিষয়ে গবেষণা করতে পারেন। এগুলো তামাকের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আরও কাজ করতে উৎসাহিত করবে।'

আলোচনায় সভাপতি বক্তব্যে অধ্যাপক ডাঃ মোঃ হাবিবে মিল্লাত, এমপি বলেন, ‘আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’- নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে বাজেটে তামাকের কর কাঠামো শক্তিশালী ও কর বৃদ্ধির সুপারিশ জানিয়ে ৫২ জন মাননীয় সংসদ সদস্য মাননীয় অর্থমন্ত্রীর নিকট চিঠি দিয়েছেন।’

সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য বক্তারা তামাকের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করার ব্যাপারে একমত হন। সংসদ অধিবেশনে তামাকের উপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাবনার পাশাপাশি তামাকের উপর কর বাড়িয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের পথ তৈরি করা, কর ফাঁকির বিরুদ্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিদ্যমান তামাকের কর ব্যবস্থাকে আরও সহজ করা, এনবিআর এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করার কথা বলেন।

Bootstrap Image Preview