নিজ দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি পরাজিত হচ্ছেন, এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রোববার সকাল থেকে। নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রথম কয়েক রাউন্ডের ভোট গণনা শেষে শুরুর দিকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতাকে পরাজয়ের শঙ্কায় ফেলেছেন একসময়ে তারই প্রধান অনুগামী বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তবে ভোট গণনার শেষ মুহূর্তে সবাইকে চমকে দিয়ে নিজের আসনে এগিয়ে গেলেন মমতা। ১৫ রাউন্ড শেষে ৩৮০০-র ভোটে এগিয়ে গেলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু তারই একসময়ের ডান হাত, মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য। তিনি গত ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। গত ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোট হয়। এই দফার ভোটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল নন্দীগ্রাম।
নির্বাচনের পর বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছিলেন মমতা ও শুভেন্দু। মমতা বলেছিলেন, তিনি নিশ্চিত, এই আসনে ৯০ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনিই জিতবেন। অন্যদিকে, শুভেন্দু বলেছিলেন, তিনি অন্তত ৭০ হাজার ভোটের ব্যবধানে মমতাকে হারাবেন।
এক সময় মমতার ‘লেফটেনেন্ট’ হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু এবারই প্রথম পদ্মফুল নিয়ে লড়ছেন। ২০১৬ সালে এ আসনে ঘাসফুলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হওয়া শুভেন্দু গতবছর ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।
মমতার সরকারে পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লোকসভায় তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করা শুভেন্দু ১৯৯৫ সালে কংগ্রেসের হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনে জেতেন। নন্দীগ্রামে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রভাব সুবিদিত।
এবার ভোটের আগে মমতাকে হারানোর ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তৃণমূলনেত্রী কলকাতায় নিজের আসন ছেড়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণও করেন।
এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলে মমতা এই আসনে হেরে যাচ্ছেন।
ভারতীয় পত্রিকাগুলো বলছে, পশ্চিমবঙ্গের দুবারের মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত এই আসনে হেরে গেলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তাকে ঘিরে বিরোধীদের বৃহত্তর জোটের যে পরিকল্পনা দানা বাঁধছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে অনেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেবল তাই নয়, মমতা যদি হেরেই যান, আর তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সেক্ষেত্রে তৃণমূল কাকে মুখ্যমন্ত্রী করবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, রোববার সকাল থেকেই কালীঘাটের বাড়িতে বসে গণনায় চোখ রেখেছেন মমতা। ঘনিষ্ঠদের তিনি বলেছেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী। ইভিএমের ভোট গণনা শুরু হলেই নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পক্ষে ব্যবধান বাড়বে, ধারণা তার।