Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হতাশা ও ক্ষোভে নিজের ৫ বিঘা ধানের জমিতে আগুন দিয়েছেন কৃষকের সন্তান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৫৮ PM
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৫৮ PM

bdmorning Image Preview


আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুনামগঞ্জের কৃষকরা নিরাপদে ধান কেটে গোলায় তুলেছেন। ‘ধান হলেই ধনী’ এমন বাক্য প্রতিফলিত হচ্ছে এবার সুনামগঞ্জের হাওরে। সোনালী ধান ঘরে তুলতে পেরে কৃষকরা খুশি।

জেলাজুড়ে যখন বৈশাখী ধান কাটার উৎসব চলছে, তখন হতাশা ও ক্ষোভে ধানের জমিতে আগুন দিয়েছেন এক কৃষকের সন্তান। সম্প্রতি জেলার শাল্লার উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

বর্গা নিয়ে চাষ করা পুরো জমির ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাকুয়া গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত দাশের ছেলে রনি দাস মনের দুঃখে আগুন দিয়ে প্রায় দেড় কেদার (৫ বিঘা) ধান পুড়িয়ে দিয়েছেন।

ছেলে রনিকে ধানে আগুন দিতে বারন করেছিলেন কৃষক বাবা নিশিকান্ত দাস। তারপরও রনি ধানক্ষেতে আগুন দেন। ধানের জমি আগুনের পোড়ার ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

জমিতে আগুন দেয়া রনি দাস হতাশার সুরে বলেন, ‘আমাদের ৬ কেদার জমি ছিল। সেই জমি বন্ধক রেখে বোনের বিয়ের দিয়েছি। এরপর অন্যের জমি বর্গা চাষ করি। এবার গ্রামের অসীম সিংহের পাঁচ কেদার জমি নগদ ১৭ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। সার-বীজ ও চাষসহ প্রায় ১০ টাকা খরচ হয়েছে। ৪৪ জাতের হাইব্রিড ধান চাষ করেছিলাম। আশা ছিল অন্তত ১০০ মণ ধান পাব। কিন্তু কপাল খারাপ, সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৫-২০ দিন আগে যখন জমির ধান সাদা হয়ে মরার মতো হচ্ছিল তখন গ্রামের মেম্বারকে জানিয়েছি। তবে ভুল করে কৃষি বিভাগকে জানানো হয়নি। কীটনাশক এনে দিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কাটার জন্য ধান ধরলে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে যায়। তাই কয়েকদিন আগে মনের দুঃখে ধানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলাম। তবে বাবার বাধার কারণে সব ধান পুড়ানো সম্ভব হয়নি।’

ধান নষ্ট হওয়ার পর সরকারি কোনো ধরনের সহায়তা পাননি রনি দাস। তাই গরু বিক্রি করে কিছু ধান কিনেছেন বলে জানান তিনি।

হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য (মেম্বার) শিথিল চন্দ্র দাস বলেন, ‘নিশিকান্ত দাসের জমির ধান নষ্ট হওয়ার বিষয়টি উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জয়ন্ত বাবুকে জানিয়েছি। তাদের সহায়তা দেয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে কথা বলেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও বিষয়টি অবগত করেছি।’

এ বিষয়ে শাল্লা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুবিন চৌধুরী বলেন, ‘গত ৪ এপ্রিল গরম বেশি পড়ায় বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। যারা আমাদের কাছে এসেছেন ও আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি তাদেরকে পরামর্শ দিয়েছি। চাকুয়া গ্রামের কৃষক নিশিকান্ত দাসের জমির বিষয়টি জানা যায়নি। আজই আমরা সরেজমিন গিয়ে তার জমিটি দেখব।’

Bootstrap Image Preview