Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতের নেতারা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৮:২৭ PM
আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৮:২৭ PM

bdmorning Image Preview


রমজানে ‘করোনার অজুহাতে’ কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন হেফাজতের নেতারা। এছাড়াও করোনা থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইতে মসজিদ-মাদ্রাসার ওপর বিধিনিষেধ মেনে নেওয়া হবে না বলেও জানান তারা।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলদের এক জরুরি সভা রোববার (১১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব কথা সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন সংগঠনের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

সভা শেষে সাংবাদিকদের বলা হয়, গত ২৬ মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সরকার দলীয় হেলমেট বাহিনীর আক্রমণের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল বের করে। হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিছিল বের হলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলি করে পাঁচজনকে শহীদ করে। 

এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ২৭ মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮ মার্চ শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু হেফাজতের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ ও সরকার দলীয় ক্যাডার বাহিনী।

সভা শেষে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হেফাজত কোনো তাণ্ডব চালায়নি; বরং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে গুপ্ত হামলার তাণ্ডব চালিয়ে রাজনৈতিকভাবে এখন হেফাজতকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সরকারের লোকজন এবং কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া এখন আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মিথ্যাচার করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল চলাকালীন কারা তাণ্ডব চালিয়েছিল? কারা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। নিশ্চয় সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলোতে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। কিন্তু নিরীহ আলেম, ওলামা, মাদ্রাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি করবেন না। অবিলম্বে গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করুন। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন।’

সভায় বলা হয়, করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। করোনা মহামারি থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, তাসবি পাঠ ও দুআ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষ্যে কুরআন ও হাদিসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখা সরকারেরই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমজানে হিফজখানা, নূরানি ও মক্তব চালু রাখতে হবে।

মসজিদে সুন্নাহ মোতাবেক নামাজ তারাবিহ, ইতিকাফ চলবে। লকডাউনের নামে শরিয়তবিরোধী কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। যথানিয়মে তাফসির, দাওয়াত ও তালিমের কাজ চালু রাখতে হবে।

সভায় দেশের সব মাদ্রাসা ও মসজিদে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি ও সমকালীন সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য কুনূতে নাযেলার আমল চালু করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

যে কোনো সংকটকালীন হেফাজতের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয় সভায়।

সভায় আগামী ২৯ মে শনিবার হাটহাজারীতে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন ঘোষণা করা হয়।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজশাহ), মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা শোআইব জমীরী, মাওলানা ওমর মেখলী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরীস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, ড. নূরুল আবসার আজহারী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন. মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হামিদী ও মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview