Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে কারণে বিমানবন্দরে কোলের শিশুকে ফেলে পালিয়ে গেলেন সৌদি প্রবাসী নারী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০২১, ০৮:০৭ PM
আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১, ০৮:০৭ PM

bdmorning Image Preview


হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উদ্ধার হওয়া আট মাস বয়সী কন্যাশিশুটির নারী অভিভাবকের পরিচয় চিহ্নিত করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সকালে বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল (আগমনী) টার্মিনাল থেকে ফেলে রাখা অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক সদস্য। শিশুটি ওই সময় কাঁদছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সেই নারীর নাম, ঠিকানা এবং অবস্থান জানা গেছে; কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হবে না। ওই নারীই শিশুটির মা বলে ধারণা পুলিশের।

তবে শিশুটিকে তার মায়ের কাছে তুলে দিতে আগ্রহী নয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।  শিশুটিকে দত্তক নিতে এরই মধ্যে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।পরে এপিবিএনের নারী সদস্যরা মেস থেকে দুধ এনে খাওয়ালে শিশুটির কান্না থামে।

এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ২টায় সৌদি আরব থেকে একটি ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করা এক নারীযাত্রী শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে যান। 

ওই নারী কেন শিশুটিকে ফেলে পালিয়ে গেলেন সে বিষয়ে পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের ধারণা- হয়তো লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিকে সঙ্গে না নিয়ে বিমানবন্দরে রেখেই চলে যান সেই নারী।

ওই নারীর সঙ্গে একই ফ্লাইটে আসা আসমা নামের এক যাত্রীর দেওয়া তথ্যমতে এমনটাই ধারণা পুলিশের।

আসমার দাবি- ওই নারী সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় বিয়ে করেছিলেন।  শিশুটি তারই।

আসমা পুলিশকে বলেছেন, ওই নারী আমাকে কাঁদতে-কাঁদতে বলেছিলেন- তিনি সৌদি আরবে কাজের জন্য গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বিয়ে করেন। শিশুটি তাদের সন্তান। দেশে ফেরার আগেই স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এখন সন্তানকে নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। এ কথা শুনে আমি তাকে বলেছিলাম, আপনার এটা করা উচিত হয়নি। বিমান ল্যান্ড করলে আমি ৪টার দিকে নামি। তখন দেখলাম বাচ্চাটি ঘুমিয়ে আছে। আর ওর মা ওখানে দাঁড়িয়ে আছে।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, শিশুটি এখন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। তাকে দত্তক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দত্তক নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যাচাই-বাছাই করে ভালো একটি জায়গায় দত্তক দেওয়ার কথা আমরা চিন্তা করছি। 

শিশুর মাকে চিহ্নিত করার পরও কেন তাকে ফিরিয়ে না দিয়ে দত্তক দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে?

এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, সেই নারীর সামাজিক পরিস্থিতি এমনই যে, তিনি দেশে ফিরে তার এ সন্তানের কথা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। তিনি বাধ্য হয়েই নিজের সন্তানকে ফেলে গেছেন। এখন জোর করে শিশুটিকে আবারো তার কাছে দিলে ভালো হবে না।

এর আগে মোহাম্মদ আলমগীর গণমাধ্যমে বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার রাত ২টায় সৌদি আরব থেকে একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন ওই নারী। ফ্লাইট অবতরণের পর তিনি ৫ নম্বর লাগেজ বেল্টের সামনে শিশুটিকে নিয়ে অবস্থান করেন। বাড়ি ফেরার জন্য রাতে গাড়ি পাবেন না, তাই সকাল পর্যন্ত সেখানেই অপেক্ষা করেন। সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ শিশুটিকে কান্না করা অবস্থায় রেখে তিনি লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যান।

Bootstrap Image Preview