ক্রিকেটের যেকোনো এক বা দুই ফরম্যাট থেকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে অবসর নিতে চান ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। দেশের একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তামিম জানান, ‘যদি চিন্তা করি পরবর্তী ৪-৫ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে চাই, তাহলে তিনটা ফরম্যাট আমার মনে হয় না এক সঙ্গে খেলতে পারবো। এটা সম্ভব নয়। তো আমার বেছে নিতে হবে সম্ভবত কোন দুটা ফরম্যাট আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশি।’
যদিও সরে যাওয়ার কারণ হিসেবে নির্দিষ্ট কোনো এক ফরম্যাট ছাড়ার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে জানাননি দেশসেরা ওপেনার। তবে এবার একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন, যে কোনো ফরম্যাট তিনি ছেড়ে দিতে পারেন।
গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ দলের এক নম্বর ওপেনার তামিম, সেটা যে ফরম্যাটেই হোক। চোট ছাড়া খুব কমই তাকে জাতীয় দলের একাদশের বাইরে দেখা গেছে এই ১৪ বছরে। তবে এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে দেশসেরা ওপেনার সরে দাঁড়ান ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে।
তারপর থেকেই বাতাসে গুঞ্জন, তামিম নতুন কিছু ভাবছেন। হয়তো তিনি ছোট ফরম্যাটে তরুণদের সুযোগ করে দিতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরেও যেতে পারেন। যদিও অবসরের কথা এখনও বলেননি।
তবে সম্প্রতি এক ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তামিম বলেন, ‘যদি আমি আরও চার-পাঁচ বছর খেলা চালিয়ে যেতে চাই, আমার মনে হয় না তিন ফরম্যাটেই খেলতে পারব। এটা সম্ভব হবে না।’
তামিম যোগ করেন, ‘আমাকে দুটো ফরম্যাট বেছে নিতে হবে, যেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাহলেই আমি দলের হয়ে অবদান রাখতে পারব। এমনও হতে পারে এখন কিংবা ছয় মাস পর, আমি দুই ফরম্যাটেও খেলতে পারব না। আমার হয়তো এক ফরম্যাট খেলতে হবে।’
যদিও তামিম ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নয়, হুট করেই তার সিদ্ধান্তটা জানাতে চান। তিনি বলেন, ‘আমি জানি আমি কতদিন খেলব কিংবা কী অর্জন করতে চাই। সেটা আমি বলব না। তবে এতটুকু বলতে পারি, খুব বেশি সময় নেব না।
‘যদি আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে বড় করতে হয়, তবে আমাকে কিছু ছাড়তেই হবে। হয়তো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই কিছু মানুষকে চমকে দেব। যদি আমি মনে করি, এটা দল এবং আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে, অবশ্যই সে সিদ্ধান্ত নেব। কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে আমি পিছপা হই না।’
তবে কঠিন সিদ্ধান্তের কোপটা কোন ফরম্যাটের ওপর পড়বে? তামিম রহস্যই রেখে দিলেন। দেশসেরা ওপেনার বলেন, ‘খুব কম ক্রিকেটারই আছেন যারা একসঙ্গে তিন ফরম্যাট থেকে অবসরে যান। কখনও তারা সবার শেষে টেস্ট ছাড়েন, যদি মনে করেন তাদের আরও কিছু অর্জন এবং দলকে দেয়ার বাকি আছে। যদি আমি দলের জন্য ওয়ানডেতে বেশি অবদান রাখতে পারি, তবে সেটাই শেষে ছাড়ব। হতে পারে টি-টোয়েন্টিও।’
তামিম বর্তমানে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। টেস্টেও তিনি মুশফিকুর রহীমের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তামিমের ২৩ সেঞ্চুরি আর ৮৫ ফিফটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। সব ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারও তিনিই।