Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশেই যুদ্ধ বিমান তৈরি করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:৪৩ PM
আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ১২:৪৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


আগামীতে বাংলাদেশেই নিজেদের জন্য যুদ্ধ বিমান তৈরির আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, বাংলাদেশেই যুদ্ধ বিমান তৈরি করতে চাই। কাজেই এর ওপর গবেষণা করা এবং আমাদের আকাশসীমা আমরা নিজেরাও যেন রক্ষা করতে পারি সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যশোরে বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানে বিমান বাহিনীর ১১ এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষ আনতে বিমান বাহিনী একাডেমির জন্য এই ঘাঁটিতে নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’। মহাকাশ গবেষণা, দেশের বিমান বাহিনী এবং বেসামরিক বিমানকে দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’। যেটা লালমনিরহাটে প্রতিষ্ঠা হবে।

‘ইতোমধ্যে তার কাজ আমরা শুরু করেছি। এসব কার্যক্রম বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বহুলাংশে বাড়িয়েছে। আজ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী দেশে ও দেশের বাইরে এক সম্মানজনক অবস্থায় উন্নীত হয়েছে। তাছাড়া আমরা যেহেতু জাতিসংঘ মিশনেও বাংলাদেশ ভূমিকা রাখছে। সেক্ষেত্রেও বিমান বাহিনীকেও আমরা উপযুক্ত করে গড়ে তুলছি। ’

‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার নির্মাণ করছি। আর আমাদের একটা আকাঙ্ক্ষা আছে, বাংলাদেশেই আমরা আমাদের যুদ্ধ বিমান তৈরি করবো। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আমরা এ ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করবো বলে বিশ্বাস করি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টি সামনে সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুযোপোযোগী করার জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করি। ইতোমধ্যে আমরা বিমান বাহিনীতে সংযোজন করেছি মিগ-২৯ সহ বিভিন্ন ধরনের ফাইটার বিমান, সর্বাধুনিক অ্যাভিওনিক্স সমৃদ্ধ পরিবহন বিমান, ইউটিলিটি হেলিকপ্টার, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ বিমান, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স র‌্যাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, নতুন নতুন ঘাঁটি, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি।

বিমান সেনাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১১ স্কোয়াড্রনকে বৈমানিকদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে দেশের আকাশসীমা প্রতিরক্ষায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক ‘জাতীয় পতাকা’ দেওয়া হলো। এই সম্মান ও গৌরব অর্জন করায় আমি ১১ স্কোয়াড্রন এবং ২১ স্কোয়াড্রনকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।  

‘কর্মদক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও দেশসেবার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আজ আপনারা পেলেন, তার মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ও আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যখন দায়িত্বপালন করেন আমি মনে করি আপনারা সব সময় যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন। যেন বাংলাদেশের মান-মর্যাদা বাড়ে, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রেখে আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। ’  

তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকা লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত। পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা যে কোনো ইউনিটের জন্য একটি বিরল সম্মান ও গৌরবের বিষয়। ১১ স্কোয়াড্রন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিমান বাহিনীর ক্যাডেটদের মৌলিক উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করে আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর সামরিক বৈমানিকদেরও এই স্কোয়াড্রন সাফল্যের সঙ্গে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ স্কোয়াড্রন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সম্মুখসারির নিবেদিত আক্রমণাত্মক স্কোয়াড্রন। এই স্কোয়াড্রন এফটি-৬ এবং এ-৫ যুদ্ধবিমান পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীকালে ২০১৫ সালে এই স্কোয়াড্রনে সংযুক্ত হয় চতুর্থ প্রজন্মের ইয়াক-১৩০ কম্ব্যাট ট্রেইনার বিমান, যা ২১ স্কোয়াড্রনকে আকাশসীমা প্রতিরক্ষার দায়িত্বে আরও শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য করে তোলে। বর্তমানে এই স্কোয়াড্রন আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের সর্বোচ্চ শেষ সীমানায় পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনা করে যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

বিমান বাহিনীর প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান ও মর্যাদা, যা বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। এই সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে আপনারা একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবেন- এটাই আমার প্রত্যাশা।

Bootstrap Image Preview