Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলার রায় আজ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:৫১ AM
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:৫১ AM

bdmorning Image Preview


আজ মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। দু’পক্ষের যুক্ততর্ক শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ধার্য করেন।

গত বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির যুক্তিতর্ক শেষ করেন। ওইদিন আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করলেও তা শেষ হয়নি। তাই গত বৃহস্পতিবার অসমাপ্ত যুক্তিতর্কের জন্য দিন রেখেছিলেন আদালত। যুক্ততর্ক শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবেন আদালত।

এ মামলার আসামিরা হলেন- বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমুম, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম, শফিউর রহমান ফারাবী, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান। এদের মধ্যে মেজর জিয়া ও আকরাম পলাতক। তাই তারা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখতে পারেননি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করে। আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ২৭ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

২০১৯ সালের ১৩ মার্চ আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপর একই বছর ১ আগস্ট অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর থেকে রাষ্ট্রপক্ষে ৩৪ সাক্ষীর মধ্যে মোট ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

যুক্তিতর্কের শেষ দিন যা হল

বৃহস্পতিবারে শুনানিতে বেশিরভাগ সময় নেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। পরে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বক্তব্যের পাল্টা যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ পান। আসামি শাফিউর রহমান ফারাবীর পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা জেলা আইন সহায়তা সংস্থা (ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড) থেকে নিয়োগ পাওয়া আইনজীবী। পরে ফারাবী নিজেই বক্তব্য দেন। আত্মপক্ষ সমর্থনে যে লিখিত বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার পুনরাবৃত্তি করে এ মামলার দায় থেকে খালাস চান ফারাবী।

বিচারক তাকে বলেন, নাস্তিকরা পোকা মাকড়ের মত, তাদের মেরে ফেলা উচিৎ। আপনার এ লেখায় এ মামলার আসামিসহ অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে আদালতে কোনো প্রমাণ তো হাজির করতে পারেননি। আপনার বিরুদ্ধে তো প্ররোচনার দায় রয়েছে। চালাকি করে লাভ নেই।

ফারাবী তখন বলেন, আমার একমাত্র সৎ বোন ছাড়া আর কেউ নেই। আমি অসহায়, টাকা পয়সা নেই। আমার সৎ বোন আমার খরচ দেয় না। কারাগারে কেইস পার্টনারদের আত্মীয় স্বজনরা কত কিছু পাঠায়, আমাকে কেউ কিছু দেয় না।

আসামি আরাফাত রহমান সাজ্জাদ ওরফে শামস ওরফে সিয়াম তার আইনজীবীর মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চান। খালাস চান আসামি মোজাম্মেল হোসেন সায়মনও। সায়মনের আইনজীবী নজরুল ইসলাম মাঝখানে বিরতি দিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বক্তব্য দেন। তার সার কথা ছিল-রাষ্ট্রপক্ষ মামলা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।

তিনি বলেন তদন্তে ত্রুটি রয়েছে। ঘটনার কোনো চাক্ষুস সাক্ষী নাই। কোনো পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য ঘটনা প্রমাণ করেনি। শুধুমাত্র ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়া যায় না।

এর আগে আরাফাত ও আবু সিদ্দিক সোহেলের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম লিটন তার মক্কেলদের খালাস চেয়ে বিভিন্ন আইনি যুক্তি তুলে ধরেন।

পরে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি গোলাম ছারোয়ার খান জাকির উচ্চ আদালতের কয়েকটি সিদ্ধান্ত তুলে ধরে আসামিদের বক্তব্য খণ্ডন করেন এবং যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ করেন। আসামিদের কয়েকজনের স্ত্রী-কন্যা এবং আত্মীয়-স্বজন এ সময় এজলাসে হাজির ছিলেন।

অভিজিতের ছোট ভাই অনুজিৎ রায় রায়ের দিন ঠিক হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা আশা করব, নিরাপরাধীরা যেন শাস্তি না পায়, আর প্রকৃত অপরাধীরা যেন সাজার আওতায় আসে। নিশ্চয়ই বিচারে তা উঠে এসেছে। বিচারক এটা দেখে বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করেই রায় দেবেন। আমরা চাই, অভিজিতের প্রকৃত হত্যাকারীদের শাস্তি।

Bootstrap Image Preview