Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঘর আলো করে এলো কন্যাসন্তান, খবর শুনেই পরপর ৩ তালাক দিলেন স্বামী!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০১:০৯ PM
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০১:০৯ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


ময়মনসিংহের নান্দাইলে দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের খবর দেয়ার দিনই মিলেছে স্বামীর তালাক। আর এতে রীতিমতো হতভম্ব হয়েছেন স্ত্রী। দিশেহারা সেই নারীকে ছয় বছর ও এক মাস বয়সের কন্যাসন্তান নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে বাবার বাড়িতে। এলাকায় অনেকের কাছে এর সুবিচার চাইলেও তার কথা শোনার জন্য পাওয়া যায়নি কাউকেই।

ভুক্তভোগী নারীর নাম সোলেমা আক্তার। তার বাড়ি নান্দাইল উপজেলার মুশল্লী ইউনিয়নের উত্তর মুশল্লী গ্রামে। প্রায় ৯ বছর আগে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় একই উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের দিলালপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রুবেল মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

জানা গেছে, সোলেমার স্বামী রুবেল ছিলেন রাজধানীর মিরপুরের এক ব্যবসায়ীর প্রাইভেট গাড়িচালক। স্বামীর চাকরির সুবাদে বিয়ের পরই সোলেমাকে যেতে হয় ঢাকায়। সেখানে কয়েক মাস থাকার পর জানতে পারেন রুবেল এর আগেও আরেকটি বিয়ে করেছেন। এরপরই ঘটে বিপত্তি। ওই ঘটনা থেকেই কথা-কাটাকাটি। একপর্যায়ে নেমে আসে অত্যাচারের খড়গ। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কাঁচপুর এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন।

সোলেমা জানান, কাঁচপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু এক সময় স্বামী অনুনয়-বিনয় করে তার সঙ্গেই থাকেন। সেখানেই জন্ম হয় এক কন্যাসন্তানের। এরপর আবারো শুরু হয় অত্যাচার। বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেন রুবেল। অন্যথায় তালাকের হুমকি দেন। কোনো উপায় না পেয়ে বিধবা মায়ের কাছ থেকে অনেক কষ্টে কিছু টাকা এনে দেন স্বামীকে। এরপর প্রায়ই টাকা আনতে বলতেন। স্বামীকে টাকা দিতে নিজের স্বর্ণালংকার বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া জমানো সব টাকাও দিয়ে দেন। এর মধ্যে ফের নির্যাতনের মাত্রা বাড়লে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাবার বাড়িতে চলে যান তিনি। বাবার বাড়িতেই ১১ জানুয়ারি জন্ম নেয় আরেক কন্যাসন্তানের।

সোলেমা আরো জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে সন্তান জন্মের খবর পেলেও তাকে ফোন করে কোনো খোঁজখবর নেননি। এছাড়া শাশুড়িসহ অনেকেই সন্তানকে দত্তক দিতে বলেন। দত্তক দেয়ার কথা না মানায় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মাধ্যমে বাড়ি থেকে চলে যেতে চাপ দেন রুবেল। এর মধ্যে ১৯ জানুয়ারি সকালে ফোন করে তাকে সন্তানের খবর দেন। কন্যাসন্তানের খবর পেয়ে তাকে অকথ্য গালিগালাজ করে আর ফোন না দেয়ার হুমকি দিয়ে সম্পর্ক রাখবে না বলেই পরপর তিন তালাক দেন।

সোলেমা জানান, এ ঘটনা শোনার পর তিনি অনুরোধ করেন স্বামীর এ কথা ফিরিয়ে নেয়ার জন্য। কিন্তু এরপর থেকে আর ফোন রিসিভ করেননি স্বামী রুবেল।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রুবেল মিয়া বলেন, কে বলেছে তাকে তালাক দিয়েছি? এ সময় স্ত্রীর ফোন রেকর্ডের কথা বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমি তার কাছে ২৫ হাজার টাকা পাই। চাইলে সে বলে আমার সংসার করবে না। এখন সে না চাইলে তো জোর করে সংসার করা যাবে না।

Bootstrap Image Preview