Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘আপনার বোনকে মেরে ফেলেছি এসে লাশ নিয়ে যান’ !

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৮:৫৪ AM
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৮:৫৪ AM

bdmorning Image Preview


বরগুনার আমতলী পৌরসভায় পারিবারিক কলহের জেরে দুই সন্তানের জননী রাবেয়া বেগমকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ওয়ালিউল্লাহর বিরুদ্ধে।

সোমবার সকাল ৮টার দিকে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে। স্ত্রীকে হত্যার পর তার ভাইকে ফোন করে লাশ নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন ওয়ালিউল্লাহ। তাকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের ডালাচাড়া গ্রামের মৃত আ. ছত্তার হাওলাদারের ছেলে ওয়ালিউল্লাহর সঙ্গে চাওড়া ইউনিয়নের চন্দ্র গ্রামের মৃত আ. আজিজ মোল্লার মেয়ে মোসা. রাবেয়া বেগমের ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ বছরের একটি মেয়ে ও চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ওয়ালিউল্লাহ পৌর শহরে একটি জমিসহ বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য স্ত্রী রাবেয়া বেগম ও তার পরিবারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। কিছুদিন আগে স্ত্রীর বড় ভাই স্কুল শিক্ষক বশির উদ্দিন বোনের নামে পৌর শহরে জমি ও একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেন। ওয়ালিউল্লাহর নামে না দিয়ে স্ত্রীর নামে জমি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে কয়েক বছর ধরে কলহ চলছিল।

আজ সকাল ৮টার দিকে ওয়ালিউল্লাহ বাড়ি আসলে রাবেয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই সন্তানকে পাশের রুমে আটকে রেখে স্ত্রীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ওয়ালিউল্লাহ। এর পরে ইট দিয়ে আঘাত করে মাথা থেতলে দেন। এতে রাবেয়ার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনা দেখে প্রতিবেশিরা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবেয়ার মরদেহ উদ্ধার করে এবং তার স্বামী ওয়ালিউল্লাহকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ওয়ালিউল্লাহ পুলিশের কাছে নিজের দায় স্বীকার করেন।

রাবেয়ার ভাই মো. বশির উদ্দিন বলেন, ‘আজ সকাল ৯টার দিকে আমার বোনের স্বামী ওয়ালিউল্লাহ আমাকে মুঠোফোনে জানায়, আপনার বোন রাবেয়াকে মেরে ফেলেছি এসে লাশ নিয়ে যান।’

বশির আরও বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে ওয়ালিউল্লাহ আমার বোনকে পৌর শহরে জমি ও ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য অত্যাচার করে আসছে। আমি আমার বোনের সুখের জন্য পৌর শহরে জমি ও একটি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছি। তাতেও তার শান্তি হয়নি, আজ আমার ভাগ্নে ও ভাগ্নি মা হারা হয়ে গেল। এদের দেখার জন্য কেউ রইল না। আমি আমার বোন হত্যার বিচার চাই।’

এ ঘটনায় আমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাবেয়া বেগমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওয়ালিউল্লাহ স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তাকে আটক করা হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

তিনি জানান, বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশা.) মো. মফিজুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

Bootstrap Image Preview