Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

মহিলা কলেজের নৈশপ্রহরী থেকে মেয়র হলেন সাইদুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৩:১৫ PM
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৩:১৫ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


তানোরের মুণ্ডমালা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমান। তিনি পেশায় নৈশপ্রহরী। ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দল মনোনয়ন দেয়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্যও সরাসরি তার বিরুদ্ধে ছিলেন মাঠে। তারপরেও ভোটে জয় পেয়েছেন তিনি।

গেলো ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাইদুর পান ৫ হাজার ৪৫৯ ভোট। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আমির হোসেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পান ৫ হাজার ৩৯৮ ভোট। সেই হিসেবে ভোটের ব্যবধান অবশ্য খুব বেশি নয়। তারপরেও সমস্ত প্রতিকূল স্রোত সাঁতরে তার এই উত্থান তৈরি করেছে বিস্ময়।

যদিও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা কর্মীদের অনেকেই এই ফলাফলকেই স্বাভাবিক মনে করছেন। স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সাইদুর দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করায় তাকে বহিষ্কার করা হয় দল থেকে। কিন্তু দলের নেতা কর্মীদের কাছে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। সে কারণেই তিনি জিতেছেন।’

এই পৌর নির্বাচনে সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম রাব্বানী আগেই ভোট না করার ঘোষণা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন এক ডজন নেতা। তাদের মধ্য থেকে সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন দলীয় মনোনয়ন পান। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান সাইদুর।

নির্বাচনের আগে গত ২৪ জানুয়ারি তানোরে এক সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী সাইদুরের প্রতি ইঙ্গিত করে ‘কোনো নাইটগার্ডকে মেয়র পদে মেনে নেওয়া যায় না’ বলে ঘোষণা করেছিলেন।

ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর সংসদ সদস্য বলেন, ‘দলের মধ্যেই কয়েকজন চক্রান্তকারী রয়েছে, যাদের কারণে দলীয় প্রার্থীর এই হাল।’ তাদেরকে চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দেয়ার দাবি জানান তিনি।

নবনির্বাচিত মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, ‘ভাই, আমি নাইটগার্ড হলেও কী ভোট করতে পারবো না? এমন কোনো আইন আছে? আমি ভাই নাইটগার্ড হয়ে ভোটে জিতেছি, ওই পরিচয়েই সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই।’

তিনি জানান, দীর্ঘসময় ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৯৯ সালে জীবিকার তাগিদে তিনি মুণ্ডুমালা মহিলা ডিগ্রি কলেজের নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরি নেন। গত বছর তিনি চাকরি ছাড়ার জন্য মৌখিকভাবে বলেও দেন। তারপরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে রেখে দেয়। সে কারণে ভোটের জন্য ১৫ দিনের ছুটি নেন তিনি।

সাইদুর বলেন, ‘জনগণের দাবি ছিলো তাই প্রার্থী হয়েছিলাম। জনগণ ভোট দিয়ে জিতিয়েছে। অনেক বড় নেতা আমার ব্যাপারে খারাপ কথা বলেছেন। কিন্তু দলের ছোট ছোট কর্মীরা আমার পাশে ছিলো। এ থেকে প্রমাণ হয়, আওয়ামী লীগ জমিদারদের নয়, সাধারণ মানুষের দল আছে এখনো। দলের বড় বড় নেতারা সেভাবে ভাবলেই ভালো করবেন। মেয়রের দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে খুব শীঘ্রই তিনি চাকরি ছাড়বেন।

Bootstrap Image Preview