Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অর্থ হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ছেলেকে হত্যা, সৌদি থেকে ছুটে আসলেন মা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০২১, ০৭:০৩ PM
আপডেট: ২০ জানুয়ারী ২০২১, ০৭:০৩ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


চাচাতো ভাই কর্তৃক অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চক্রান্ত করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ দাবি জানান সন্তান হারা মা সাতক্ষীরার আশাশুনির বড়দূর্গাপুরের মৃত মিন্টু মোড়লের স্ত্রী বৃদ্ধা খাদিজা খাতুন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার কন্যা মারিয়া ও ছেলে মুরাদের জন্মের কয়েকবছর পর আমার স্বামী আনুমানিক ২৫/৩০ বছর পূর্বে মারা যান। সে সময় দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে অন্য স্বামীর ঘরে না গিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে, মানুষের কাছ থেকে সাহায্য তুলে দুই সন্তানকে মানুষ করি। সন্তানদের সুখের জন্য আমি বিগত ৩ বছর পূর্বে সৌদি আরবে কাজ করতে যাই। আমার একমাত্র পুত্র মুরাদ ঢাকার একটি বেসরকারি গার্মেন্টসে চাকুরি করত। তারই একাউন্টে আমি টাকা পাঠাতাম। ঢাকার গাজীপুরের বাসায় আমার পুত্রের সাথে দেবর আজহারুল ইসলামের পুত্র (মুরাদের আপন চাচাতো ভাই) সন্ত্রাসী প্রকৃতির বাধনও থাকতো। পরসম্পদ লোভী বাধন গোপনে আমার পুত্রের কাছ থেকে আমার পাঠানো সমদূয় অর্থসহ তার উপার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত করতে থাকে।

সু-কৌশলে বাধন তারই পূর্ব পরিচিত রবিশাল জেলার বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানরত চরিত্রহীন নিপার সাথে আমার পুত্রের বিবাহ প্রদান করে। বিবাহের পর বিভিন্ন কৌশলে নিপা, বাধন ও নিপার ফুফু জনৈক মহিলা ৩ বছর ৮ মাস ধরে মুরাদের একাউন্টে আমার পাঠানো প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকা মোট ৯ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। আমার পুত্র বিভিন্ন সময়ে আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় মুরাদকে সরকারি চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা গুলো হাতিয়ে নেয়।

এছাড়াও মুরাদ আমাকে বলেছিল বাধনের সাথে ওই চরিত্রহীন নিপার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। বাধন বিভিন্ন সময়ে নিপার সাথে কথা বলত। তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলেও আমাকে জানায়। আমি মুরাদকে সাতক্ষীরা ফিরে যেতে বললে সে বলেছিল করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যাবো।

কিন্তু ২০২০ সালের রমজানের দুইদিন পূর্বে বাধন আমাকে ফোনে জানায় আমার পুত্র এক্সিডেন্ট করেছে। পরে নিপা জানায় আমার পুত্র গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বাধনের ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৭৬৮ ৫৩১৪২৮। উক্ত নাম্বারে ফোন দিলেও বাধন এখন আর রিসিভ করে না। নিপাও রিসিভ করে না। অথচ বাধন আমার পুত্রের মৃত্যুর পর তার বসের নিকট পাওয়া টাকা চেয়ে ঝামেলাও করেছিল।

আমার কলিজার ধনকে অর্থের লোভে ওই বাধন চরিত্রহীন নিপার সাথে যোগসাজস করে তাকে হত্যা করেছে। আমি তার মৃত্যুর খবর শুনে অস্তির হয়ে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি আসার পর জানতে পারি ওই লম্পট সন্ত্রাসী বাধন আমার পুত্রের স্ত্রী নিপাকে বিবাহ করে সংসার করছে। তাদের পূর্ব থেকেই সম্পর্ক ছিলো। পুত্র মুরাদের লাশ ঢাকা থেকে তড়িঘড়ি করে বাড়ি এনে কাউকে না দেখিয়ে তার দাফন সম্পন্ন করে। সে সময় গ্রামবাসী বা কোন আত্মীয় স্বজনকে আমার পুত্র মুরাদের লাশ একটি বার দেখতেও দেয়নি তারা।

এদিকে বাধন ঢাকায় ছোট একটি কোম্পানিতে চাকুরি করলেও বর্তমানে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় আসা যাওয়ার পথে বাসে না চড়ে বিমানে চলাফেরা করে। অথচ বাধনের পিতা একজন পঙ্গু মাদক ব্যবসায়ী। বর্তমানে টিভি, ফ্রিজ সহ লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের আসবাবপত্র ব্যবহার করে।

আমি একজন পুত্রহারা অসহায় মাতা হিসেবে আমার সন্তানকে হত্যার সাথে জড়িত নিপা ও পর সম্পদলোভী সন্ত্রাসী বাধনকে গ্রেফতার পূর্বক সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে আইজিপি মহোদয়সহ সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

Bootstrap Image Preview