Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

মহানায়িকাকে ছাড়াই কাটলো ৮ বছর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারী ২০২১, ০২:৪৫ PM
আপডেট: ১৭ জানুয়ারী ২০২১, ০২:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


চলচ্চিত্রের স্বর্ণালী সময়ে কোটি দর্শককে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন সুচিত্রা সেন। তার চোখের চাহনিই যথেষ্ট ছিল। একাধিক প্রজন্ম মুগ্ধ হয়েছেন তার অভিনয়ে। স্বপ্নের সেই মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৮ম প্রয়াণ দিবস আজ।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার এক হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুর আগে অজানা অভিমানে তিনি পর্দার অন্তরালে চলে যান। ১৯৭৮ থেকেই প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাকে। কেন এই লুকোছাপা, তা অজানাই থেকে গেছে।

সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের পাবনা জেলায়। আসল নাম তার ‘রমা’। বাবা-মা, এক ভাই ও তিন বোনকে নিয়ে শৈশব-কৈশোর কেটেছে পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের বাড়িতে। পাবনাতেই তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদীক্ষা শুরু। পাবনা মহাখালি পাঠশালায় শুরু এবং পরবর্তীতে পাবনা গার্লস স্কুলে ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

শ্বশুরবাড়ি ঢাকার গেন্ডারিয়ায়। ১৯৪৭ সালে দিবানাথ সেনের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন সুচিত্রা। গেন্ডারিয়া শুধু সুচিত্রা সেনের শ্বশুরবাড়িই নয়, সেখানে তার দাদাশ্বশুরের নামে একটি সড়কের নামকরণ হয়েছে দীননাথ সেন রোড। সুচিত্রার সংসার জীবনের শুরুতে গেন্ডারিয়ার বাড়ি ছেড়ে সেন পরিবারটি কলকাতার বালিগঞ্জে স্থায়ী হয়ে গিয়েছিল। তবে দাম্পত্য সুখের হয়নি। ১৬ বছরের দাম্পত্যজীবন শেষে সুচিত্রা সেন ও দিবানাথ সেন আলাদা হয়ে যান।

দেশভাগের সময় তার পরিবার কলকাতায় স্থায়ী হয় এবং কলকাতার চলচ্চিত্রে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়। তার প্রথম চলচ্চিত্র 'শেষ কোথায়' কখনও মুক্তি পায়নি। তার চতুর্থ চলচ্চিত্র 'সাড়ে চুয়াত্তর' (১৯৫৩) সুপারহিট হয়। এই চলচ্চিত্র থেকেই উত্তম কুমারের সঙ্গে তার জুটি স্থায়ী হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলা ও হিন্দি মিলে ৬২টি ছবিতে অভিনয় করেন। এর মধ্যে ৮টি চলচ্চিত্র হিন্দি ভাষায় নির্মিত, বাকি সবই বাংলা ভাষার।

পঞ্চাশের দশককে বলা হয় ভারতীয় চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ। এই সময়েই নির্মিত হয়েছে উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত জনপ্রিয় সব চলচ্চিত্র। 'দীপ জ্বেলে যাই', 'উত্তর ফাল্গুনী', 'সপ্তপদী', 'হারানো সুর' এ সময়েরই ছবি। 'সাড়ে চুয়াত্তর'-এর রমলা, 'সাগরিকা'র সাগরিকা, 'হারানো সুর'-এর রমা ব্যানার্জি, 'পথে হলো দেরি'র মল্লিকা, 'রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত'-র রাজলক্ষ্মী, 'দীপ জ্বেলে যাই'-এর রাধা, 'সপ্তপদী'র রিনা ব্রাউন, 'উত্তর ফাল্গুনী'র পান্না বাঈ প্রমুখ চরিত্র দর্শকের মনে হয়তোবা আজো স্থায়ী হয়ে আছে। ১৯৫০এর দশক থেকে প্রায় ২৫ বছর কোটি বাঙালির হৃদয়ে ঝড় তুলেছেন সুচিত্রা সেন।

সুচিত্রা সেন বম্বেতে (মুম্বাই) ৮টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরমধ্যে অন্যতম হলো 'দেবদাস'। এখানে সুচিত্রা পার্বতীর ভূমিকায় আর দিলীপ কুমার দেবদাসের ভূমিকায় অভিনয় করেন। আরেকটি বিখ্যাত হিন্দি চলচ্চিত্র 'আঁধি', যাতে সুচিত্রা অভিনীত চরিত্রটিতে ছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া। হৃষিকেষ মুখার্জির 'মুসাফির' আরেকটি উল্লেখযোগ্য হিন্দি চলচ্চিত্র।

১৯৬৩ সালে 'সাত পাকে বাঁধা' চলচ্চিত্রের জন্য মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান সুচিত্রা সেন। ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পুরস্কার পান ১৯৭২ সালে এবং ২০১২ সালে পান পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পুরস্কার বঙ্গবিভূষণ পদক। ২০০৫ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন, কিন্তু পুরস্কার নিতে নিভৃতবাস ছেড়ে দিল্লি যেতে হবে এই কারণে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

Bootstrap Image Preview