Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আজহারির নামানুসারে রাখা শিশুকে বাঁচাতে ভিক্ষাও করতে পারছে না বাবা- মা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী ২০২১, ০৩:০০ PM
আপডেট: ১৫ জানুয়ারী ২০২১, ০৩:০০ PM

bdmorning Image Preview


দুই মেয়ের পর ছেলেসন্তানের জন্ম হওয়ার খুশিতে বাবা-মা ছেলের নাম রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারির নামানুসারে ‘মিজানুর রহমান’। কিন্তু চার মাস বয়সী মিজানুরকে এখন পর্যন্ত ডাক্তারের ছুরি-কাঁচির নিচে যেতে হয়েছে দুইবার। তবুও সুস্থ হয়নি সে! উপরন্তু হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র দেখা দিয়েছে ছোট্ট এই শিশুটির। ফের অপারেশন টেবিলে যেতে হবে মিজানুরকে। একমাত্র ছেলের এমন জটিল অসুস্থতায় পরিবার থেকে উধাও হয়ে গেছে হাসি।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামের রিকশাচালক বাবা রফিকুল ইসলাম ও গৃহিণী খুশি আরা খাতুনের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। হৃৎপিণ্ডের অপারেশন করাতে লাগবে প্রায় দুই লাখ টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু কোথায় পাবেন এত টাকা? এই চিন্তায় দিশেহারা অসহায় পরিবারটি!

সরেজমিন জানা যায়, জন্মের সময় মিজানুরের নাভির ওপর একটি বড় মাংসপিণ্ড দেখা দেয়। ছিল না পায়ুপথ। এছাড়া প্রস্রাবের রাস্তাও দুটি। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিয়ে গেলে দুই দফায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাংসপিণ্ড অপসারণ এবং পায়ুপথ বের করেন চিকিৎসক। এর জন্য দরিদ্র পরিবারটির ধারদেনা হয়েছে প্রায় লাখ টাকার ওপরে।

সম্প্রতি শিশু মিজানুর পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা-মা। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মিজানুরের হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র ধরা পড়ে। শুধু তাই নয়, প্রস্রাবের রাস্তায় রয়েছে সমস্যা। তিন মাস পর অপারেশন করাতে হবে। অপারেশন করাতে খরচ হবে দুই লাখ টাকার বেশি।

চিকিৎসকের এমন কথা শুনে বাড়ি ফিরে আসেন তারা। বর্তমানে মিজানুরের প্রতিনিয়ত ঠাণ্ডা লেগে থাকছে। শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুটি। কোথাও সহযোগিতা না পেয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছেন রিকশাচালক বাবা রফিকুল ইসলাম। কিন্তু ছেলের এমন করুণ অবস্থা দেখে অঝোরে কেঁদে চলেছেন মা খুশি আরা খাতুন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলে হবে জেনে বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারি সাহেবের নাম অনুসারে নাম রেখেছিলাম। ইচ্ছে ছিল ছেলেকে আলেম বানানোর। কিন্তু টাকার কাছে হেরে যাচ্ছি আমরা। আমাদের স্বপ্ন কী শেষ হয়ে যাবে? বারবার অপারেশন করাতে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। প্রতিদিন ৩-৪শ’ টাকা আয় করে অপারেশনের এত টাকা জোগাড় করব কীভাবে?

অশ্রুসিক্ত নয়নে মা খুশি আরা খাতুন বলেন, আর কত কষ্ট করবে আমার ছেলে? এত টাকা আমরা পাব কোথায়? লজ্জায় ভিক্ষাও করতে পারছি না! তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এ ব্যাপারে ফৈলজানা ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী প্রামাণিক বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। ধারদেনা করে দুইবার অপারেশন করিয়েছে। বর্তমানে পরিবারটির চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই। তাই সরকারি সহযোগিতা পেলে উপকৃত হতো দরিদ্র পরিবারটি।

Bootstrap Image Preview