Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টিকা রফতানির ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেইঃ সিরাম ইন্সটিটিউট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারী ২০২১, ০৭:৫০ PM
আপডেট: ০৪ জানুয়ারী ২০২১, ০৭:৫০ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


বিডিমর্নিং ডেস্কঃ ভারতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সিরাম ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, তাদের টিকা রফতানির ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।

সিরাম ইন্সটিটিউটের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন দিল্লিতে জানিয়েছেন, টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ তাদের টিকা রফতানির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।

তবে কোম্পানিটি এখন অন্য দেশে টিকা রফতানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তবে রফতানি শুরুর আগেই ভারত সরকারকে ১০ কোটি টিকা দেয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে তারা রপ্তানি করতে পারবে না, যেহেতু তাদের রফতানির অনুমতি নেই।

বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সেটি এই সিরাম ইন্সটিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬০০ কোটি টাকা সিরামের অ্যাকাউন্টে জমা দেয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সরকার।

সিরাম ইনস্টিটিউট টিকা রফতানি করতে পারবে না এমন খবরে বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হবার পর দেশটি ঢাকায় দিল্লির হাইকমিশন এবং দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে সকাল থেকেই যোগাযোগ করছিল। দুপুরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব আবদুল মান্নান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, টিকার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেহেতু জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি হয়েছে সেহেতু বাংলাদেশের যথাসময়ে টিকা পেতে কোনও সমস্যা হবে না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বলেন, আমার এইমাত্র ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে।

জরুরি সংবাদ সম্মেলনটিতে যোগ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও। তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে চুক্তি হয়েছে, তা ব্যাহত হবে না। সব দেশের জন্য তারা এই বার্তা দিয়েছে যে, আগে ভারতের জন্য হবে, তারপরে অন্য দেশে যাবে। তবে আমরা আশ্বস্ত যে, এটা কোনও সমস্যা হবে না, সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর জানাবে, যে আমরা কবে পাবো। তবে আমরা এখনো আশ্বস্ত থাকতে পারি যে, আমাদের চুক্তি অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন পাবো।

ভারতের দিক থেকে সুনিশ্চিত কোনও আশ্বাস পাওয়া গেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটা যেহেতু আন্তর্জাতিক চুক্তি, সেটাকে সম্মান দেখানো হবে বলে আমরা আশা করি। সেই সঙ্গে সকাল থেকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। সব বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তারা কেউ নেগেটিভ কিছু বলেননি।

চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা ১২০ মিলিয়ন ডলার পাঠাতে হবে। সেটা বাংলাদেশ এর মধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে বলে তিনি জানান। চুক্তি অনুযায়ী, ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য ৬০০ কোটি টাকার বেশি জমা দেয়ার কথা এরমধ্যে জানিয়েছে দেশটি। বিনিময়ে সিরাম ইন্সটিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে।

এর আগে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছিল যে, চুক্তির ধারা অনুযায়ী তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে বাংলাদেশে অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনার কথা ছিল। চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ইন্সটিটিউট ছয় মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা আসবে।

Bootstrap Image Preview