Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রফতানি নিষিদ্ধ করল ভারত, করোনা ভ্যাকসিন পাচ্ছে না বাংলাদেশ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারী ২০২১, ০৯:১০ AM
আপডেট: ০৪ জানুয়ারী ২০২১, ০৯:১০ AM

bdmorning Image Preview


ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।

গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়াল্লা বলেন, ‘রোববার ভারতীয় নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিনের জরুরি অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু শর্ত হলো, ঝুঁকিতে থাকা ভারতীয় জনগণের জন্য ডোজ নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য রফতানি করতে পারবে না সিরাম ইন্সটিটিউট।’

এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ অবৈধ মজুত ঠেকানো উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে শুধুমাত্র ভারতীয় সরকারের কাছে ভ্যাকসিন হস্তান্তর করতে পারব।’

পুনাওয়াল্লা জানান, সিরাম এই মুহূর্তে বেসরকারি বাজারেও এই ভ্যাকসিন বিক্রি করতে পারবে না।

এর আগে, আগ্রহী দেশগুলোতে রফতানির আগে আগামী দু মাসে ভারতের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্ব দেয়ার কথা এদিনই জানিয়েছিল সিরাম। শুক্রবার দেশটিতে অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল ভারত। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বিবেচনায় ভারতের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়।

ভারতে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ার পর বাংলাদেশেও এ ব্যাপারে আশা দেখা দিয়েছিল। চলতি জানুয়ারিতেই ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা জানিয়েছিল দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল সিরামের।

উল্লেখ্য, গত ৫ নভেম্বর অক্সফোর্ড উৎপাদিত ‘কোভিডশিল্ড’ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ পেতে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এই উদ্যোগের আওতায় প্রথম ধাপের ৬ মাসের প্রতি মাসে বাংলাদেশকে ৫০ লাখ করে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা ছিল সিরামের। তবে ভারতের এই হঠাৎ রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়াকে বিলম্বিত করবে।

এদিকে ভারতের সেরাম ইনন্সিটিউট থেকে তিন কোটি করোনা টিকা আনার কথা ছিলো বাংলাদেশের৷ এ নিয়ে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়৷ প্রতি ডোজ টিকার দাম ধরা হয় পাঁচ ডলার৷ পরিবহণ খরচ এক ডলার৷ বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে একই দামে টিকা পাবে বলে চুক্তিতে লেখা ছিলো ৷ তিন কোটি টিকার প্রথম কিস্তির ৫০ লাখ চলতি মাসেই পাওয়ার  কথা ছিলো৷ বাকি টিকা ধাপে ধাপে পাওয়া যাবে৷ 

বাংলাদেশে কারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন গত মাসেই তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ কিন্তু সেই তালিকা এখনও হয়নি৷ কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি গত রোববার বলেন, ‘‘সব প্রস্তুতি নিয়েই আমরা কাজ করছি৷ সময়মত জানতে পারবেন৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি হল ওরা যখন টিকা দেয়া শুরু করবে আমরাও তখন দেয়া শুরু করব৷ আশা করি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে টিকা দেয়া শুরু হবে৷’’

প্রথম ধাপে যে ২৫ লাখ ব্যক্তিকে ৫০ লাখ টিকা দেয়া হবে (একেকজন দুই ডোজ করে) সে তালিকা বাস্তবে এখনও করা হয়নি৷ শুধু অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে৷ সেখানে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী, গণপরিবহন কর্মী৷

টিকার অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি ও প্রস্তুতির জন্য জেলা উপজেলায় কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও মাঠের চিত্র ইতিবাচক নয়৷ নারয়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ সামাদ জানান, তারা এখনও কোনো তালিকা করেননি৷ তাদের কোনো ড্রাই রানের প্রস্তুতিও নিতে বলা হয়নি৷ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কীভাবে এবং কী প্রক্রিয়ায় টিকা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দেবেন৷ তাদের দুই দিনের একটা প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ আর তালিকা হবে অনলাইনে৷ তবে তালিকা তৈরির কোনো কাজ এখনও শুরু হয়নি৷’’

Bootstrap Image Preview