Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

হোয়াটসঅ্যাপ ইমোর ভয়ঙ্কর ফাঁদে প্রবাসীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩০ PM
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩০ PM

bdmorning Image Preview


মেসেজ পাঠানো, কথা বলা বা ভিডিও কলিংয়ের অ্যাপ হিসেবে প্রবাসীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ইমো- হোয়াটসঅ্যাপ। আর এ জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে টাকা-পয়সা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন হাজারো প্রবাসী।৯০ এর দশকে ইন্টারনেট বা তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ছিল না বললেই চলে। ওই সময় কাগজে লিখে প্রিয়জনকে চিঠি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ডাকযোগে পাঠাতে হত। প্রবাসীরা লোক মারফত ছাড়াও ডাকযোগে চিঠি পাঠালে সেটা হাতে পেতে কমপক্ষে ১৫ দিন সময় লাগত।

বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সহজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রবাসীরা ব্যবহার করে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, স্কাইপসহ হাজারও সফ্টওয়ার। সহজে মোবাইলে ইমো চালু করা এবং নম্বর যোগ করতে ঝামেলা কম হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ অ্যাপটি ব্যবহার করে।এক মোবাইল নম্বর দিয়ে একাধিক মোবাইলে ইমো ব্যবহার করা যায়। যার কারণে কিছু কুচক্রী মহল কমিউনিটির মধ্যে পরিচিত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে থাকে। সরল বিশ্বাসে প্রবাসীরা তাদের পিন নাম্বার, পাসওয়ার্ড পর্যন্ত মানুষের সঙ্গে শেয়ার করে। ফলে অনেক প্রবাসী হ্যাকারদের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে।

প্রবাসীদের বিভিন্ন অফিস বা কোম্পানি থেকে লটারি বিজয়ী হয়েছে অথবা সমস্যার কথা বলে ফোন করে মোবাইলের মেসেজের পাসওয়ার্ড নম্বর চাওয়া হয়। আবার বিভিন্ন গ্রুপ নম্বর যোগ করে বারবার ফোন করে বিরক্ত করা হয়। গ্রুপে অপ্রীতিকর ছবি-ভিডিও পাঠানো হয়। গ্রুপে না থাকতে চাইলেও বারবার যুক্তও করা হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টাকা-পয়সা খোয়ানো এক প্রবাসী বলেন, অনেকেই জানে না ইমো গ্রুপ থেকে কিভাবে সরে যেতে হয়। এ রকম গ্রুপে হ্যাকার চক্রের সদস্যরা গ্রুপ বাদ দেয়ার কথা বলে কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তির মোবাইলের মেসেজের নম্বরটা দিতে বলে। আবার অপরিচিত কাউকে মোবাইল দিলে অথবা দেখা যায় অনেকেই বেখালি বা কাজের চাপে মোবাইলে একস্থানে রেখে ব্যস্ত হয়ে যায় অন্যকাজে। এই সুযোগে কুচক্রী মহল মোবাইলের মেসেজের পাসওয়ার্ড নিয়ে ইমো হ্যাক করে। এরপর হ্যাকাররা পরিচিত-অপরিচিত নম্বরে বিভিন্ন ধরনের বিপদের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী কুয়েত প্রবাসী আব্দুস সাত্তার জানান, আমার ইমোতে হঠাৎ ফোন আসে। পরিচিত মনে করে আমার নিজের মোবাইলের মেসেজে আসা পিন পাসওয়ার্ড বলে দিই। এরপর কাজে-কর্মে ব্যস্ত হয়ে যায়। এই ফাঁকে ইমো হ্যাক করে আমার এক বন্ধু জসিম উদ্দিনকে ফোন করে দেশে জরুরি পাঁচ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলে।

তিনি বলেন, জসিম টাকা পাঠিয়ে দেয় দেশের সেই নম্বরে। হ্যাকার পরে আবার অন্য আরেক নম্বরে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলে তখন জসিমের সন্দের হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বিষয়টা জানালে আমি অবাক হয়ে যায়। পরে বুঝতে পারি আমার ইমো হ্যাক হয়েছে।আরও এক ভুক্তভোগী বলেন, প্রতিদিন প্রবাসীদের ফোন আসে, অনেক সময় বলে লটারিতে বিজয়ী হয়েছি, ম্যাসেজটি ২০টি গ্রুপে শেয়ার করলে কোটি টাকা অ্যাকাউন্টে জমা হয়ে যাবে ইত্যাদি।জানা গেছে, একাধিক নারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে ইউরোপ প্রবাসী কন্যা সেজে মধ্যপাচ্য প্রবাসী যুবকদের বিয়ে করে ইউরোপে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। কখনো আবার প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, মাসেঞ্জারে ভিডিও কলে অশ্লীল কথাবার্তা বলে তা কৌশলে ধারণ করে।

পরে এ ছবি, ভিডিও অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাক মেইল করে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। অনেক সময় আবার গরিব-অসহায় লোককে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের কথা বলে অসুস্থ রোগীদের বানোয়াট ছবি দেখিয়ে সাহায্যের নামে অর্থ হাতায়। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ওই আইডিগুলো নষ্ট করে দেয়।ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং থেকে বাঁচতে সর্তক হতে হবে প্রবাসীদের। অপরিচিত কাউকে মোবাইল দেয়া যাবে না। অপরিচিত কাউকে কোন ওজুহাতে নিজের মোবাইলের পাসওয়ার্ড দেয়া যাবে না।

Bootstrap Image Preview