Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিন্ডিকেট করে মুনাফা লুটছেন-খুচরা ব্যবসায়ীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:২১ PM
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:২১ PM

bdmorning Image Preview


বরিশাল নগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচামালের বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রাক-ট্রলার বোঝাই করে শীতকালীন সবজি আসছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রচুর পরিমাণে সবজি আসছে পাইকারি এ মোকামে। বিক্রিও হচ্ছে সে রকম। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সবজির দামও নেমে এসেছে।

পাইকারি এ মোকামে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে প্রতি মণ ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা দরে। সে হিসেবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৭ টাকা। ধনেপাতা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা দরে। সে হিসেবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৩০ টাকা। অথচ আড়াই কিলোমিটার দূরে সিঅ্যান্ডবি রোড চৌমাথা বাজারে খুচরা বিক্রেতারা একই ফুলকপির দাম হাঁকাচ্ছিলেন কেজিপ্রতি ৩০ টাকা। আর ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে।আড়াই কিলোমিটার ব্যবধানে প্রতি কেজি সবজি পরিবহন, খুচরা বিক্রেতাদের অন্যান্য খরচ ও লাভের হিসাব যোগ করলেও প্রতি কেজিতে দামের পার্থক্য ৫ থেকে ৬ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে সেখানকার খুচরা ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ গুণ মুনাফা লুটছেন। সরকারিভাবে সবজির বাজার তদারকি না থাকায় দামের এই বিশাল ফারাক বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

একইভাবে পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে টমেটো, বেগুন, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স, মুলা, বাঁধাকপি, শসা, শালগম, কাকরোল, করলা, বরবটি ইত্যাদি সবজির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২৫ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে। যা এসব সবজির পাইকারি মূল্যের দ্বিগুণেরও বেশি।

নগরীর পোর্ট রোড ও বাজাররোডের বিভিন্ন আড়তে সবজির মতো নিত্যপণ্যের দামেও বড় পার্থক্যের চিত্রই মিলেছে। নগরীর পোর্ট রোড ও বাজার রোডের পাইকারি মোকামে আলু ৩৭, পেঁয়াজ (দেশি) ৪৫, রসুন ৭৫, আদা (ওয়াশ) ৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এসব পণ্য এক হাত বদল হয়ে নগরীর চৌমাথা বাজার, নতুন বাজার, বটতলা বাজার, বাংলা বাজার, রূপতলী বাজার, নথুল্লাবাদ বাজারসহ নগরীর বিভিন্ন বাজারে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে।

কাঁচামালের পাইকারি বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেট ও নগরীর পোর্ট রোড ও বাজাররোডের নিত্যপণ্যের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ (দেশি) ৪৫-৫০ টাকা, রসুন (দশি) ৭০-৭৫ টাকা, আলু ৩৭-৪২ টাকা ,আদা ৪৫-৪৮ টাকা, ফুলকপি ৭-১০ টাকা, ধনেপাতা ৩০ টাকা, শিম ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০-৭৮ টাকা, মুলা ৫ টাকা, শালগম ১০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, বাঁধাকপি ১২ টাকা, বেগুন ২০-২৫ টাকা, বরবটি ২২-২৬ টাকা, শসা ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অথচ নগরীর চৌমাথা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেল, ফুলকপি ৩০, শিম ৩০, কাঁচামরিচ ১২০, বাঁধাকপি ৩০, শালগম ৩০, বরবটি ৫৫, গাজর ৬০, মুলা ২০, ধনেপাতা ১০০, শসা ৩০, পেঁয়াজ ৬০, আলু ৪৫, আদা ৯০ ও রসুন ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০৫ টাকা থেকে বেড়ে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৭০, মসুর ডাল ৭০, ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০, কক মুরগি ১৮০,সোনালি মুরগি ১৯০ লেয়ার মুরগি ১৮০, ফার্মের মুরগির ডিম হালি ২৮, গরুর মাংস ৫৫০-৬০০ টাকা কেজি করে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে নগরীর পোর্ট রোড মোকামে এক কেজি ওজনের ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা দরে। সে হিসেবে ইলিশের প্রতি কেজি ইলিশের পাইকারি দাম পড়ে ১ হাজার টাকা। ওই ইলিশ নগরীর বিভিন্ন বাজারে ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া খাল, বিল ও নদীনালায় পানি কমতে শুরু করায় দেশি বিভিন্ন মাছ ধরা পড়ছে, যা বাজারে আসছে।

এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি নষ্ট হয়েছে। পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকেরা দ্বিতীয়বার সবজি চাষ করেছেন। প্রচুর ফলনও হয়েছে। ওই সব সবজি বাজারে আসছে। তবে শীত যত বাড়বে, শীতের সবজির সরবরাহ তত বাড়তে থাকবে। দামও আরও কমতে থাকবে।

 গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি ফুলকপির দাম কমেছে ৭২০ টাকা। আজ ফুলকপির মণ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি ৭ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। সব সবজির দাম কমতির দিকে।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শাহ শোয়াইব মিয়া জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারগুলো প্রায়ই পরিদর্শন করা হচ্ছে। তবে অস্বাভাবিক দাম নেয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি কোনো ক্রেতাও অভিযোগ করেননি। শিগগিরই বাজারগুলো আবার পরিদর্শন করা হবে বলে জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview