Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাহেদের সঙ্গে 'চুক্তি' কার নির্দেশে অবশেষে জানালেন হেলথ ডিজি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:৫৭ PM
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০, ১০:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ নিজ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। 

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি সচিবালয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নানের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেন। সেখানে তিনি বলেছেন, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল সাবেক স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশে। তবে সাবেক সচিব বুধবার গণমাধ্যমে এ বিষয়টি অস্বীকার করেন।

বর্তমান স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান গণমাধ্যমকে জানান, মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিখিত জবাব দিয়েছেন, আমরা সেটি পেয়েছি। সেই জবাবের সঙ্গে তিনি অনেক কাগজ সংযুক্তি দিয়েছেন। সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। আমরা দেখব, তার কাছে যা জানতে চেয়েছি সেগুলো আছে কিনা। ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হলে আমরা লিখিতভাবে জানাব এবং সন্তুষ্ট না হলে পরবর্তীকালে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তির লিখিত আদেশ এ ব্যাখ্যার সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে কিনা। তিনি জানান, সেই চুক্তি করা হয়েছিল সাবেক স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলামের মৌখিক নির্দেশে। যিনি বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আবদুল মান্নান আরও উল্লেখ করেন, সব বিস্তারিত জানার জন্যই আমরা তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম।

এর আগে, রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণার বিভন্ন বিষয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে নির্দেশেই অধিদফতর রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়।

এর প্রেক্ষিতে গত ১২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শারমিন আকতার জাহান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ বলতে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক কী বোঝাতে চেয়েছেন, সে বিষয়ে তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, যে কোনো হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তির আগে নিয়মানুযায়ী তা সরেজমিন পরিদর্শন, হাসপাতাল পরিচালনার অনুমতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, জনবল ও ল্যাব ফ্যাসিলিটি বিশ্লেষণ করে বিবেচিত হলেই চুক্তি করার সুযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার ভোরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব)  বিশেষ অভিযানে ধরা পড়লেন রিজেন্ট হাসপাতাল প্রতারণা মামলার প্রধান পলাতক আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ। সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার রামগতি সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি জানান, সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাঁখরা কোমরপুর গ্রামের সীমান্ত লবঙ্গ নদীপথে ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার দিকে সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও একবার একই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছিলেন তিনি। সকাল নয়টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনা হবে।

র‌্যাব সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার এএসপি বজলুর রহমান জানান, সাহেদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তাকে গ্রেফতারের জন্য সাতক্ষীরার আইনশৃংখলা বাহিনী বিভিন্ন স্থানে হানা দিয়ে আসছিল।

এর আগে রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগ ৬ জুলাই র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে মো. সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করে। সেই মামলায় ৯ দিন পলাতক থাকার পর গ্রেফতার হলেন মো. সাহেদ।

ওই মামলায় সাহেদকে প্রধান আসামি করে মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সে সময় প্রধান আসামিসহ ৯ জন আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।

আসামিরা হলেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ, রিজেন্ট হাসপাতালের কর্মী তরিকুল ইসলাম, আবদুর রশিদ খান জুয়েল, মো. শিমুল পারভেজ, দীপায়ন বসু, আইটি কর্মকর্তা মাহবুব, সৈকত, পলাশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহসান হাবীব (১), হেলথ টেকনিশিয়ান আহসান হাবীব (২), হেলথ টেকনোলজিস্ট হাতিম আলী, অভ্যর্থনাকারী কামরুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের প্রকল্প প্রশাসক মো. রাকিবুল ইসলাম, রিজেন্ট গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা অমিত বণিক, রিজেন্ট গ্রুপের গাড়িচালক আবদুস সালাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রশিদ খান।

Bootstrap Image Preview