করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্তদের উপর পরীক্ষামূলকভাবে সিগারেট বা ‘নিকোটিন প্যাচ’ প্রয়োগ করবে ফরাসি বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি প্যারিসের পিটি-সালপেট্রিয়ের হাসপাতালে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীরা করোনায় গুরুতরভাবে আক্রান্ত হওয়ার কম ঝুঁকিতে আছে। ওই গবেষণার উপর ভিত্তি করেই এই পরীক্ষা চালানো হবে। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
প্যারিসের ওই হাসপাতালের গবেষণায় দেখা গেছে, তামাকের একটি উপাদান- খুব সম্ভবত নিকোটিন- করোনার মোকাবিলায় কার্যকরী। গবেষণা চলাকালীন সময়ে হাসপাতালের ধূমপায়ীদের মধ্যে করোনায় গুরুতর আক্রান্ত হওয়ার হার কম দেখা গেছে। গবেষণার পর, করোনার চিকিৎসায় নিকোটিনের কার্যকারিতা নিশ্চিতে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালাতে চাইছে ওই হাসপাতালের গবেষক দল। তবে এখনো পরীক্ষাটি শুরুর জন্য স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
তবে হাসপাতালের ওই গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, তারা মানুষজনকে ধূমপানে উৎসাহিত করতে চান না। ধূমপানে অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।
প্রায় ৫০ শতাংশ ধূমপায়ী মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকেন। হয়তো নিকোটিন করোনার বিরুদ্ধে কার্যকরী, কিন্তু যেসব ধূমপায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, অন্যান্য রোগীদের তুলনায় তাদের অবস্থা দ্রুত গুরুতর হয়ে উঠেছে।
পিটি-সালপেট্রিয়ের হাসপাতালের গবেষকরা, ৪৮০ জন করোনা আক্রান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিদের মধ্যে গুরুতর উপসর্গ দেখা না যাওয়ায় তাদের বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। গবেষকরা দেখেন যে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের বয়স গড়পড়তায় ৬৫ বছর। তাদের মধ্যে নিয়মিত ধূমপায়ীর হার মাত্র ৪.৪ শতাংশ। অন্যদিকে, বাড়িতে যাওয়ার অনুমোদন পাওয়া রোগীদের গড় বয়স ৪৪। তাদের মধ্যে নিয়মিত ধূমপান করেন এমন মানুষের হার ৫.৩।
জিজ্ঞাসাবাদে অংশগ্রহণকারী রোগীদের বয়স ও লিঙ্গ বিবেচনায় গবেষকরা দেখেন যে, নিয়মিত ধূমপায়ীরা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় করোনার কম ঝুঁকিতে আছেন। তাদের এই গবেষণার ফলাফলগুলো এখন ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত মার্চে প্রকাশিত চীনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি এক হাজার করোনা আক্রান্তের মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ ধূমপায়ী ছিলেন।