বয়স মাত্র ১৭। এতটুকুন বয়সে খেলছেন লিওনেল মেসিদের কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে। এবার সত্যিকারের লিওনেল মেসির সহায়তায় লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে জোড়া গোল করার ইতিহাস গড়লেন বার্সেলোনার ‘নতুন মেসি’ আনসু ফাতি।
তরুণ এই ফুটবলারের জোড়া গোলে ঘরের মাঠে লেভান্তের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বার্সেলোনা। সে সঙ্গে লা লিগায় নিজেদের অবস্থান দুই নম্বরেই ধরে রাখতে সক্ষম হলো কাতালানরা। ২২ ম্যাচ শেষে বার্সার পয়েন্ট ৪৬। সমান সংখ্যক ম্যাচে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
অভিষেকের পর লম্বা একটা বিরতি দিয়ে গোলের দেখা পেলেন আনসু ফাতি। তাও একটা নয়, জোড়া গোল। সে সঙ্গে লা লিগার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে জোড়া গোল করার রেকর্ড গড়লেন ফাতি। ১৭ বছর ৯৪ দিন বয়সে এই রেকর্ড গড়ে ফাতি ভাঙেন জুয়ানমি জিমেনেজের রেকর্ড। ২০১০ সালে ১৭ বছর ১১৫ দিন বয়সে রিয়াল জারাগোজার বিপক্ষে মালাগার হয়ে জোড়া গোল করেছিলেন জিমেনেজ।
লেভান্তের জালে জড়ানো ফাতির দুই গোলেরই উৎস ছিলেন লিওনেল মেসি। দু’জনের অসাধারণ যুগলবন্দী খুব প্রয়োজনীয় একটি জয় উপহার দিতে পেরেছে বার্সেলোনাকে।
মৌসুমের শুরুতে লেভান্তের মাঠে গিয়ে ৩-১ ব্যবধানে হেরে আসতে হয়েছিল বার্সাকে। সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নেয়া হলো এই ম্যাচে। তাও তো লেভান্তের রুবেন রোচিনা এক গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনে।
পরপর দুই মিনিটে গোল দুটি করেন আনসু ফাতি। ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করে বসেন তিনি। এরপরের মিনিটে আবারও। অর্থ্যাৎ ৩১তম মিনিটের মাথায় করলেন দ্বিতীয় গোল। রুবেন রোচিনা ম্যাচ শেষ হওয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে (৯০ + ২ মিনিটে) একটি গোল পরিশোধ করেন। দলকে সমতায় আনার সময় আর তার হাতে ছিল না। নাহয়, পয়েন্ট খোয়াতে হতে পারতো বার্সাকে।
অ্যাথলেটিকো বিলবাওকে ২-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে গেটাফে। পেছনে ফেলে দিয়েছে সেভিয়াকে। যারা ১-১ গোলে ড্র করেছে আলাভেসের সঙ্গে। আগেরদিন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
জোড়া গোল করার পর আনসু ফাতি বলেন, ‘এগুলো সবই স্বপ্ন। এমন একটি মুহূর্তের জন্য আমি সব সময় স্বপ্ন দেখতাম। আমি এ জন্য আমার কোচ এবং সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যে তারা আমাকে দারুণ একটি সুযোগ করে দিয়েছেন। এমন একটি দলে এত কম বয়সে সেরা একাদশে আসা খুবই কঠিন ব্যাপার। কিন্তু অভাবনীয় সমর্থন আমি আমার সতীর্থদের কাছ থেকে পেয়ে আসছি।’
মেসির সঙ্গে খেলা ছিল তার কাছে স্বপ্নের ব্যাপার। তিনি বলে, ‘লিওনেল মেসির সঙ্গে খেলতে পারাটা ছিল আমার কাছে একটি স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হয়েছে। আমি চাই এভাব নিয়মিত খেলে যেতে।’
গত বছর আগস্টেই বার্সার ইতিহাসে নাম লেখা আফ্রিকান দেশ গিনি বিসাউয়ের এই ফুটবলার। ক্লাবের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ট ফুটবলার হিসেবে শুরু করেন পেশাদার ক্যারিয়ার। তখন তার বয়স ছিল ১৬। ওই সময় বার্সার ফরোয়ার্ড লাইনে ইনজুরি সমস্যা থাকার কারণে ফাতি সুযোগ পেয়েছিলেন, ওসাসুনার বিপক্ষে গোল করে হয়েছিলেন ক্লাব ইতিহাসে সর্বকনিষ্ট স্কোরার।
গত ডিসেম্বরে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ খেলতে নেমে গোল করেন। যা ছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড। এরপর আবারও দলের বাইরে ফাতি। অবশেষে লুইস সুয়ারেজ এবং ওসমান ডেম্বেলের ইনজুরি তাকে আবার সুযোগ এনে দেয়।