১০ বছর ১০ মাস পর সাদা পোশাকের ক্রিকেটের রঙিন বল গড়াল করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। যে স্টেডিয়ামে এক সময় ঝড় তুলতেন ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতাররা, সেই স্টেডিয়ামে ১০ বছর ১০ মাস পর ঝড় তুলছেন দুই শ্রীলঙ্কান পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো এবং লাহিরু কুমারা।
মায়াবী ঘূর্ণির জালে ব্যাটসম্যানকে আটকে রাখারও কাজ করেছেন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া। পিছিয়ে থাকলেন না পাকিস্তানি পেসাররাও। শাহিন আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ আব্বাসও ঝড় তোলার চেষ্টা করলেন।
মোট কথা, প্রায় ১১ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট দেখা করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা টেস্টের প্রথম দিন পার হয়েছে বোলারদের রাজত্বের মধ্য দিয়েই। একদিনেই পড়েছে ১৩ উইকেট। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা খেই হারিয়েছে লঙ্কান বোলারদের সামনে। অলআউট হয়েছে মাত্র ১৯১ রানে।
জবাব দিতে নেমে স্বচ্ছন্দে নেই শ্রীলঙ্কাও। ১৯ ওভার খেলে প্রথম দিন শেষে ৬৪ রান না তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছে তারা। এখনও পাকিস্তানের চেয়ে ১২৭ রান পিছিয়ে সফরকারীরা। হাতে আছে আর ৭ উইকেট। লিড নিতে পারবে তো শ্রীলঙ্কা?
২০০৯ সালে লাহোর হামলার পর অবশেষে পাকিস্তানের মাটিতে মাঠে গড়িয়েছে টেস্ট ক্রিকেট। প্রতিপক্ষ সেই শ্রীলঙ্কা। যদিও রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট বলতে গেলে পুরোটাই ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। প্রথম চারদিন টুক-টাক খেলা হওয়ার পর শেষ দিক একটু স্বস্তিতে ব্যাট করতে পেরেছে দুই দল। অনিবার্যভাবেই ম্যাচটা অমিমাংসিত।
করাচিতে যেভাবে খেলা শুরু হয়েছে, তাতে ফল আসবেই- এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতেই লঙ্কান পেসের আঘাতে জর্জরিত হতে শুরু করে পাকিস্তান। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ১০ রানেই হারিয়ে বসে ২ উইকেট। শান মাসুদ এবং আজহার আলিকে সরাসরি বোল্ড করেন ফার্নান্দো। শান মাসুদ ৫ রান করলেও আজহার আলি তো ডাক মারেন।
এরপর আবিদ আলি আর বাবর আজম মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৬৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ফিরে যান আগের ম্যাচে ইতিহাস গড়া আবিদ আলি। চতুর্থ উইকেটে বাবর আজম এবং আসাদ শফিক জুটি বাধেন। এ দু’জনের ব্যাটে গড়ে ওঠে ৬২ রানের জুটি।
দলীয় ১২৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৬০ রানে ফিরে যান বাবর আজম। তিনি ফিরে যেতেই শুরু হয় পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯১ রানেই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা। আসাদ শফিক সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন। তিনি আউট হন ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে।
শ্রীলঙ্কান বোলারদের দৃঢ়তার সামনেই মূলতঃ হার মানতে বাধ্য হন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা। বিশ্ব ফার্নান্দো প্রথম দুই উইকেট নিলেও পরের ৮ উইকটে ভাগাভাগি করে নেন দুই পেসার এবং স্পিনার। পেসার লাহিরু কুমারা ৪টি এবং স্পিনার লাসিথ এম্বুলদেনিয়াও নেন ৪টি উইকেট।
জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কারও তিন ব্যাটসম্যান ফিরে গেছেন সাজঘরে। ওসাদা ফার্নান্দো (৪), দিমুথ করুনারত্নে (২৫) এবং কুশল মেন্ডিস (১৩) ফিরে যান পাকিস্তানি পেসের সামনে। দিন শেষে ৮ রানে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ এবং ৩ রানে লাসিথ এম্বুলদেনিয়া রয়েছেন উইকেটে। মোহাম্মদ আব্বাস দুটি এবং শাহিন আফ্রিদি নেন ১টি করে উইকেট।