Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গণতন্ত্রের নেত্রী এখন স্বৈরতন্ত্রের আজ্ঞাবহ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৮ AM
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৮ AM

bdmorning Image Preview


মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের কারণে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া অং সান সু চি ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে নন্দিত ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা গণহত্যা নিপীড়নে যখন গোটা বিশ্ব মিয়ানমারকে ধিক্কার জানাচ্ছে তখন তার নীরবতা সু চির সেই ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। এর পর নানা সময় রোহিঙ্গাবিরোধী বক্তব্য ও সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে নিন্দিত হয়েছেন তিনি। অনেক সংগঠন সংস্থা প্রত্যাহার করেছে তাকে দেওয়া পুরস্কার ও সম্মাননা।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) সেনাবাহিনীর গণহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়ে সু চি তার অবশিষ্ট ইতিবাচক ভাবমূর্তিটুকুও হারাতে চলেছেন। দাবি উঠেছে তার নোবেল শান্তি পুরস্কার কেড়ে নেওয়ারও। বর্তমানে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানিতে সু চির অংশগ্রহণ ও মিয়ানমারের অবস্থান সম্পর্কে তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘আইসিজেতে মিয়ানমারের উপস্থাপনাকে অত্যন্ত দুর্বল মনে হয়েছে। বিপরীতে গাম্বিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী তথ্য উপস্থাপন করেছে। আশা করছি একটি ইতিবাচক রায় আসবে। সু চি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন আরসার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। একই সঙ্গে সু চি একবারও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। এটি থেকেই প্রমাণিত হয় রাখাইনে গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে মিয়ানমার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সু চি মিথ্যাচারের মাধ্যমে গণহত্যাকে অস্বীকারের চেষ্টা করেছেন।’

একই বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান বলেন, ‘প্রত্যাশিতভাবেই সু চি আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিথ্যাচার করেছেন। যিনি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন, নিজ স্বার্থে সেই গণতন্ত্রের নেত্রী এখন স্বৈরতন্ত্রের আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছেন। সু চির লক্ষ্য আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হওয়া। সে জন্য সংবিধান সংশোধন জরুরি। তিনি মনে করছেন সেনাবাহিনীর পক্ষাবলম্বন করলে এই প্রয়োজনীয় সংবিধান সংশোধন সম্ভব। এ জন্য তিনি সেনাবাহিনীর গণহত্যার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তবে এই মামলা থেকে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার তেমন কিছু নেই।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশীদ বলেন, সু চি আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। তিনি গণহত্যার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, সেখানে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রকান্তরে তিনি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, সেটি স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে প্রত্যাশা করছি গণহত্যা বন্ধের পক্ষে রায় আসবে। সেটি খুব ইতিবাচক হবে। বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ সমাধান চাচ্ছে। যে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে তাদের ফেরত পাঠানো বাংলাদেশের লক্ষ্য।’

Bootstrap Image Preview