Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রিফাত হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন বরগুনার এমপি শম্ভুর ছেলে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০১৯, ০৯:৫১ PM
আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯, ০৯:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বরগুনার নৃশংস খুন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন স্থানীয় এমপি শম্ভু দেবনাথের ছেলে সুনাম দেবনাথ। যা বিডিমর্নিং পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেয়া হলো-

প্রথমেই আমরা স্পস্ট হবো নাম নিয়ে, কারণ যে মারা গেছে আর যারা মেরেছে তাদের নাম এক হওয়াতে আমরা গুলিয়ে ফেলছি। কাকতালীয়ভাবে দুই জনের বাবার নামও এক। যে ছেলেটিকে হত্যা করা হলো তার নাম রিফাত শরীফ, পিতার নাম দুলাল শরীফ, সাং ৬ নং ইউনিয়ন।

আর হত্যাকারীদের মধ্যে প্রধান হচ্ছে নয়ন,এবং তার সহযোগীরা হচ্ছে রিফাত ফরাজী, পিতা দুলাল ফরাজী, সাং বরগুনা ধানসিড়ি রোড। এবং রিফাতের ছোট ভাই রিসান ফরাজী, পিতাঃ ও সাংঃ ঐ

এই রিফাত ও রিশানের অন্য একটি পরিচয় রয়েছে, তারা দুজনই সাবেক সাংসদ ও বর্তমান জেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। যারা আদর করে তাকে বাবা বলেই সম্মোধন করে।

রিফাত ও নয়নদের আরো একটি পরিচয় আছে, তারা অত্র এলাকায় এমন কোন ছাত্রাবাস নাই যেখান থেকে ছাত্রদের ল্যাপটপ, মোবাইল, টাকা ইত্যাদি ছিনতাই এবং চুরি করে নিয়ে আসেনাই। এ নিয়ে বহুবার মামলা হয়েছে, বহুবার জেল খেটেছে, কিছুদিন পর আবার ছাড়াও পেয়েছে। তাদের নামে কতোগুলো মামলা রয়েছে তা থানা কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবেন।

নয়ন (নয়ন বন্ড) সবথেকে বেশি নজরে এসেছে তখন যখন নয়ন একটি বড় ধরনের মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মাদক পুলিশ উদ্ধার করে নয়নের কাছথেকে। রিফাত ফরাজীর বিভিন্ন অপকর্মের নালিস থানায় দেয়ার পাশা পাশি তার খালু জেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের কাছেও দেয়া হয়েছিল, কিন্তু বারবার নালিশ কারিদের সেখান থেকে অপমান, অপদস্ত হয়ে ফিরেআসতে হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজনার নাম তরিকুল ইসলাম ২০১৭ সালে একবার এই রিফাত আর রিসান ফরাজী সামান্য কথাকাটিতে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছিল, এনিয়ে তরিকুলের বাবা বাদি হয়ে থানায় মামলাও করেছিলো। বিচার নিয়ে গিয়েছিলো তার খালু দেলোয়ার হোসেনের কাছে। কিন্তু অপমান হয়ে ফিরতে হয় তাদের। এর পরে ভয়ে সে তার ছেলেকে বরিশালে পড়ালেখা করতে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে তরিকুল বরিশালে পড়া লেখা করছে।

আর একজন ভুক্তভোগী হচ্ছেন বরগুনা পৌরসভার একজন কাউন্সিলর, নান্না কমিশনার। তার বাসায় কিছু ছাত্ররা ভাড়া থাকে, সেখান থেকে এই রিফাত ফরাজী ৫টা মোবাইল ছিনতাইকরে, এবং তার প্রতিবাদ করায় এই রিফাত ফরাজী তার সামনে রামদা নিয়ে আসে। নান্না কমিশনার দেলোয়ার হোসেনের একজন প্রধান কর্মি হওয়াতে তারকাছে নালিস দিলে, তাকেও সেখান থেকে অপমান হয়ে আসতে হয়। এবং এরকম ঘটনা রিফাত করতেই পারেনা বলে তাকে সেখানথেকে অপমান করে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ডিকেপি রোডের ডাঃ আলাউদ্দিন এর ভাড়া বাসায় কিছু ছাত্ররা ভাড়া থাকতো সেখান থেকে এই রিফাত প্রায় ২০টি মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিনতাই করে নিয়ে আসে, পরে তখনকার ওসি রিয়াজের হস্তক্ষেপে রিফাত ফরাজীর বাবাকে থানায় এনে সেই সকল মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় তারা অন্যান্ন ছাত্রাবাস থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ ছিনতাই করে নিয়ে আসতো।
এরকম আরো অনেক ঘটনা আছে, যা বলে শেষ করা যাবেনা।

যে ছেলেটির ঘটনা প্রথমেই বলেছি (তারিকুলের) সে বর্তমান ঘটনার প্রেক্ষিতে ফেসবুকে লিখেছে “ ২০১৭ তে আমার ঘটনার বিচার হলে আজ রিফাতের প্রাণ হারাতে হতো না”। লেখাটি কতোটা গুরুত্ববহন করে তা এখন আমরা বুঝতে পারছি।

রিফাত শরিফ আমাদের খুব কাছের ছোট ভাই ও কর্মী ছিলো, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সাথে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা করেছে। নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে, রিফাতের মৃত্যু সংবাদে। তবে এ খুনের পেছনে আরো অনেক রহস্য আছে। বিভিন্ন খবর ও মিডিয়াতে যাকে এখন হিরো বানানো হচ্ছে মূল ভিলেন সে নিজেও হতে পারে, রিফাত শরিফের বন্ধুদের থেকে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তাতে এটাই বুঝা যায়। আর একটু সময় পার হলে হয়তবা আরো ক্লিয়ার হওয়া যাবে।

কারোর অত্মীয় হওয়া কোন অপরাধ না। তবে পূর্বের ঘটনা গুলোর সঠিক বিচার হলে কিংবা ঠিকঠাক শাসন করা হলে আজ রিফাত শরিফকে মরতে হতো না।

Bootstrap Image Preview