Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আরবরা! নাস্তিকের সংখ্যা বাড়ছে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৯, ০৬:২৩ PM
আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯, ০৬:২৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


আরব বিশ্বের বাসিন্দাদের মধ্যে ধর্ম তথা ইসলাম বিমুখতা বেড়েছে। ওই অঞ্চলের ১৩ ভাগ মানুষ নিজেদের ধার্মিক বলে ভাবেন না। ত্রিশ বছরের কম বয়সীদের মধ্যেই ধর্ম বিমুখতার পরিমাণ বেশি। সম্প্রতি এক জনমত জরিপে এমনটি জানা যায়।

মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার ২৫ হাজার লোকের ওপর যৌথভাবে ওই জরিপ চালায় বিবিসি নিউজ আরবি এবং আরব ব্যারোমিটার রিসার্চ নেটওয়ার্ক। এটিকে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় এ ধরণের সবচেয়ে ব্যাপক অনুসন্ধানী জরিপ বলে দাবি করা হচ্ছে। এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে ধর্ম, রাজনীতি, যৌনতা থেকে শুরু করে নারী অধিকার এবং অভিবাসনসহ এই মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল।

গত বছরের শেষ এবং এ বছরের শুরুতে চালানো এই জরিপে দশটি দেশ এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মানুষ অংশ নেয়।

ইসলাম ধর্মে অবিশ্বাসীদের সংখ্যা বাড়ছে

ওই জরিপে দেখা যায়, গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই ধর্মে বিশ্বাস করে না এমন লোকের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে ওই অঞ্চলে ধর্মে অবিশ্বাসী লোকের সংখ্যা ১৩ শতাংশ। অথচ ২০১৩ সালে এমন মানুষের সংখ্যা ছিল ৮ শতাংশ। তিরিশ বছরের কম বয়সীদের মধ্যেই ধর্মে অবিশ্বাস করার প্রবণতা বেশি বেড়েছে। এদের মধ্যে ১৮ শতাংশই নিজেদের ধার্মিক বলে ভাবে না। তবে কেবলমাত্র ইয়েমেনেই ধর্মে অবিশ্বাসী এরকম মনোভাবের মানুষের সংখ্যা কমেছে।

পারিবারিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না নারীরা

একজন নারীরও যে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অধিকার আছে, পুরো অঞ্চলজুড়েই বেশিরভাগ মানুষ তা সমর্থন করে। এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম আলজেরিয়া। সেখানকার ৫০ শতাংশেরও কম মানুষ মনে করেন, একজন নারী রাষ্ট্রপ্রধান হলে সেটি তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

তবে যখন পারিবারিক জীবনের প্রসঙ্গ আসে- তখন বেশিরভাগ মানুষ, এমনকি বেশিরভাগ নারীরাও মনে করে পারিবারিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার চূড়ান্ত অধিকার কেবল স্বামীর। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেবল মরোক্কো। সেখানে সংসারের সব বিষয়ে স্বামীর মতামতই চূড়ান্ত, অর্ধেকের কম মানুষ তা সমর্থন করেন না।

সমকামিতার চেয়ে অনার কিলিং বেশি পছন্দ

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর লোকজনই সমকামিতাকে সমর্থন করে না। এমনকি পুরো মধ্যপ্রাচ্য এবং আরব বিশ্বে সবচেয়ে উদারপন্থী দেশ হিসেবে বিবেচিত লেবাননও বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখে না। দেশটিতে সমকামিতার গ্রহণযোগ্যতা মাত্র ৬ শতাংশ।

তবে সমকামিতা পছন্দ না করলেও 'অনার কিলিং' বা পারিবারিক সন্মান রক্ষার হত্যাকাণ্ডকে এখনও সমর্থন করেন আরব দেশগুলোর বেশিরভাগ লোকজন। আর কে না জানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ভয়ঙ্কর সামাজিক প্রথাটির শিকার হয়ে থাকে এই নারীরাই।

ট্রাম্প-পুতিনের চেয়ে জনপ্রিয় এরদোয়ান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মোটেও পছন্দ করেন না আরব অঞ্চলের মানুষ। বলাবাহুল্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইসরায়েল তোষণ নীতিই এর অন্যতম কারণ। সেখানে ট্রাম্পের চেয়েও বেশি জনপ্রিয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এই দুইজনের চেয়েও যে নেতা আরবের লোকজন কাছে বেশি প্রিয় তিনি আর কেউ নন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান। আরব বিশ্বের ১১টি দেশ এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের সাতটিতেই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বলিষ্ঠ নীতি প্রশংসিত হয়েছে। তবে লেবানন, লিবিয়া এবং মিশরে এরদোয়ানের চেয়েও বেশি সমর্থন পেয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নীতি।

ইসরায়েলই সবচেয়ে বড় হুমকি

মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় নিরাপত্তা নিয়ে এখনো উদ্বেগ আছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইসরায়েলের পর কোন দেশগুলি তাদের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি, তখন দ্বিতীয় বৃহত্তম হুমকি হিসেবে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। তৃতীয় স্থানে ছিল ইরান।

ইউরোপ যেতে আগ্রহী বেশিরভাগ আরব

আরব বিশ্বের যত দেশে এ জরিপ চালানো হয়েছে, প্রত্যেক জায়গাতেই প্রতি পাঁচজনে একজন বলেছেন, তারা দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও অভিবাসী হওয়ার কথা ভাবছেন। সুদানে জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই অভিবাসী হতে চেয়েছেন। উত্তর আমেরিকায় যেতে চান এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগের তুলনায় ইউরোপে যেতে আগ্রহীদের সংখ্যা কমেছে। তারপরও যারা বিদেশে পাড়ি জমাতে চান, এখনো তাদের বেশিরভাগেরই পছন্দ ইউরোপ।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

Bootstrap Image Preview