Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিকাশ পাসওয়ার্ড হ্যাক, প্রতারণার ফাঁদে পড়ে জীবন দিল শারমিন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০১৯, ০৮:২৩ PM
আপডেট: ২৬ মে ২০১৯, ০৮:২৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


চট্টগ্রাম নগরীর বিশ্বকলোনি এলাকায় একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতেন শারমিন। দুই বোন, ভাই ও বাবাকে নিয়ে বিশ্বকলোনি এল ব্লকের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।

শনিবার (২৫ মে) দুপুর ১২ টার দিকে শারমিনের মোবাইলে একটি কল আসে। বিকাশ কল সেন্টারের পরিচয়ে ফোনটি করেছিল একটি প্রতারক চক্র।

প্রতারকরা শারমিনকে জানায়, সে বিকাশের গ্রাহক হিসেবে এক লাখ টাকা পুরষ্কার জিতেছে। তবে এই টাকা পেতে হলে শারমিনের বিকাশ একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করা লাগবে। এসব আলাপচারিতার একফাঁকে শারমিনের বিকাশ একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে নেয় প্রতারকরা।

প্রতারকদের কথার ফাঁদে পা দিয়ে শারমিন তার বাসার পাশে থাকা মায়ের দোয়া নামে একটি বিকাশ পয়েন্টে যায়। সেখান থেকে সে তার বিকাশ একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করে। ঐ সময় বিকাশ পয়েন্টের এজেন্টকে শারমিন জানিয়েছিল তার নামে কিছুক্ষণ পরেই এক লাখ টাকা আসবে। টাকা এলেই এজেন্টের টাকা পরিশোধ করে দিবে সে।

এই বুঝাপড়ার ভিত্তিতে নিজের একাউন্টে টাকা ক্যাশ ইন করে শারমিন পুরষ্কারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। অনেক্ষণ অপেক্ষার পরেও পুরষ্কারের টাকা আর আসে না। এরপর নিজের একাউন্ট চেক করতে গিয়ে শারমিনের তো মাথায় হাত। তার একাউন্টে কোন টাকাই নেই। এরই ফাঁকে তার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে শারমিনের ধারণা হয় এজেন্ট ক্যাশ ইন করেনি। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।

শারমিন আর দোকানদারের বাদানুবাদের মাঝে সেখানে স্থানীয় জনতা জড়ো হয়ে যায়। বিকাশ এজেন্ট প্রমাণ করতে সক্ষম হয় সে ক্যাশ ইন করেছে। শারমিনও বুঝতে সক্ষম হয় সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এসবে সময় চলে যায় চার ঘন্টা। টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শারমিনকে দোকানে বসিয়ে রাখা হয়।

এর মধ্যে ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া লোকজন শারমিনকে উদ্দেশ্য করে নানান বিদ্রুপাত্মক কথা বলে। পরবর্তীতে শারমিনের পিতা হারুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দূরে আছেন বলে জানান। ফিরলে টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এরপর শারমিনকে ছেড়ে দেন তারা।

ঐদিন রাত আটটায় শারমিনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে আকবর শাহ থানা পুলিশ। পুলিশের ধারণা অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে শারমিন।

শারমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে এই ঘটনা উঠে আসে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে। এর সত্যতা নিশ্চিত করছেন আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন।

এই বিষয়ে সিএমপির আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান,প্রতারণা শিকার হয়ে এবং স্থানীয়দের তিরস্কারমূলক কথাবার্তায় অপমাণিত হয়ে রাগে ক্ষোভে শারমিন আত্মহত্যা করেছে বলে তার পরিবারের দাবি। আমরা বিস্তারিত জানতে কাজ করছি।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মায়ের দোয়া স্টোরের মালিকের ভাইকে গতকাল থানায় ডাকা হয়েছিল। সকালে বিকাশ এজেন্ট নিজেও থানায় এসেছেন। তদন্ত শেষ হলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো

Bootstrap Image Preview