Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে সাগরের পানি, ডুবে গেছে ঘরবাড়ি

চট্রগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ মে ২০১৯, ০৪:৪৭ PM
আপডেট: ০৪ মে ২০১৯, ০৪:৪৮ PM

bdmorning Image Preview


ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আজ দুপুরের দিকে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল অতিক্রম করছে। এর প্রভাবে সারা দেশেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে, মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

এ দিকে আজ শনিবার সকাল থেকেই ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে চট্টগ্রামে দমকা বাতাস শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে জোয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করে সাগরের পানি। এতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়িসহ ফসলাদি।

দুপুর ১২টার দিকে নগরের ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের নির্মাণাধীন বাঁধ ভেঙে আকমল আলী রোড এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে বর্তমানে ওই এলাকায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ দিকে বেড়িবাঁধ ভেঙে জেলার আনোয়ারা উপজেলার গহিরা, সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর ও সন্দ্বীপ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া নগরের আশকারদীঘি এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে কিছু সময়ের জন্য যানচলাচল বন্ধ ছিল।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আজ সারাদিনই চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি পড়বে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণও বাড়তে পারে। অমাবশ্যার কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চাইতে বেশি উচ্চতায় আছে।

অন্যদিকে আজ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আবহাওয়া অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অব্যাহত থাকবে। এই সময়ে নদী ও সাগর উত্তাল থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখন ফণী খুলনা-সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে সরে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার এবং এটি উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হচ্ছে।’

‘অগ্রসর হয়ে চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ী, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ঢাকা, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে। এটি অবস্থান করবে আরো পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। এই সময়ে এসব অঞ্চলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করবে। তারপর এটি ভারতের দিকে চলে যাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে শামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি যেহেতু ফণী বাংলাদেশের মধ্যঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে, বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। তারসঙ্গে ভারি বর্ষণও হতে পারে। রংপুরে, রাজশাহীতে ভারি বর্ষণ হয়েছে। সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলেও ভারি বর্ষণ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে প্রবেশের কারণে বরিশালে বাতাসের একটানা গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার এবং চাঁদপুরে ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। তিনি আরো বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আগামীকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তারপর পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে ভারতের ওডিশা রাজ্যে ‘ফণী’র তাণ্ডব শুরু হয়। সেখানকার পুরি উপকূলে প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে। সেখানে আটজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

এরপর সেটি পশ্চিমবঙ্গে আঘাত আনে। মধ্যরাতের পর ভারতের এই রাজ্যে প্রবেশ করে ‘ফণী’। ৯০ কিলোমিটার বেগে খড়গপুরে এটি আঘাত হানে। পরে আরামবাগ, কাটোয়া, নদীয়া হয়ে গেছে মুর্শিদাবাদে। তারপর সেখান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে আলিপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

Bootstrap Image Preview