Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:১৮ PM
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:১৮ PM

bdmorning Image Preview


চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার ১১০তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। রানার্সআপ হয়েছেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন কক্সবাজারের চকরিয়ার জীবন বলি।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নগরীর লালদীঘির মাঠে অনুষ্ঠিত এ বলিখেলায় দীর্ঘক্ষণ দুই শক্তিশালী বলীর মধ্যে লড়াই শেষে দুই পয়েন্ট জিতে শিরোপা জয় করেন শাহজালাল বলী।

টানটান উত্তেজনার মূল লড়াই স্থায়ী হয় প্রায় ২৬ মিনিট। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এ লড়াইকালে দর্শকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। জীবন ও শাহজালাল বলীর পক্ষে স্লোগান দেন তারা।

সিরাজগঞ্জের মো. শফিকুল ইসলাম ও মহেশখালীর সিরাজুল মোস্তফার মধ্যে লড়াইয়ের মাধ্যমে শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার এবারের আসর।

জব্বারের বলী খেলায় প্রথম রাউন্ডে ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। চ্যালেঞ্জিং রাউন্ডে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছিলেন জীবন, কাঞ্চন, বজল, মো. হোসেন, কালাম, সাহাবউদ্দিন, কালু এবং শাহজালাল।

এর আগে বিকেল সোয়া চারটায় বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান।

তিনি বলেন, আজকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য আনন্দের দিন। যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যে জব্বারের বলীখেলা শুরু হয়েছিল তা ১১০তম আসরে পা দিয়েছে। বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানাবো, এ খেলা যেন দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার জন্য সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। এ খেলার মাধ্যমে সকল প্রকার অপসংস্কৃতি বিলুপ্ত হবে। বাঙালির প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

তিনি বলেন, জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে নিরাপত্তা কোনো ঘাটতি রাখা হয়নি। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কাজ করছে।

প্রতিবছর বৈশাখের ১২ তারিখে এ বলী খেলার আয়োজন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টায় লালদীঘি মাঠে শুরু হয় এ বলী খেলা। গতবছর ২০০ জন বলী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। বলী খেলায় অংশ নিতে কক্সবাজারের টেকনাফ, রামু, চকরিয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া এবং পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বলীরা লালদীঘি পাড়ে ছুটে আসে।

নগরীর লালদীঘি ময়দানে বিকালে বলী খেলা দেখতে হাজারো দর্শক জড়ো হয়েছিল। কানায় কানায় পূর্ণ মাঠের আশে পাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে উঠেও মানুষ দেখে ঐতিহ্যবাহী এ বলী খেলা।

এবার বলীখেলায় চ্যাম্পিয়নকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ট্রফি এবং রানার-আপকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও ট্রফি দেওয়া হয়েছে। অন্য বলীদের নগদ ১ হাজার টাকা ও একটি করে ট্রফি দেওয়া হয়।

খেলা পরিচালনা করেছেন মূল রেফারি সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মালেক। তাকে সহযোগিতা করবেন নূর মোহাম্মদ লেদু ও জাহাঙ্গীর আলম।

বলীখেলাকে ঘিরে বুধবার (২৪ এপ্রিল) লালদীঘির চারপাশে এক বর্গকিলোমিটারজুড়ে বসেছে তিন দিনের বৈশাখী মেলা। সুঁই থেকে ফুলশয্যার খাট পর্যন্ত সব ধরনের গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রী মিলছে মেলায়। বেশি বিক্রি হচ্ছে মাটির তৈজসপত্র, বাঁশি, শিশু-কিশোরদের খেলনা, ফুল ও শলার ঝাড়ু, শীতলপাটি, হাতপাখা, গাছের চারা, মুড়ি-মুড়কি, শাড়ি, তৈরি পোশাক ইত্যাদি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দোকানিরা।

প্রসঙ্গত, বিৃটিশদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বাংলা ১৩১৬ সালের ১২ বৈশাখ (ইংরেজি ১৯০৯ সালের ২৫ এপ্রিল) বলি খেলা বা মল্লযুদ্ধ দিয়ে সূচিত হয় এ বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা। চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার সওদাগর (ব্যবসায়ী) আবদুল জব্বার এটি শুরু করেছিলেন বলে মত্যুর পর তার নামেই উৎসবের নামকরণ হয় ‘জব্বারের বলি খেলা ও বৈশাখী মেলা’।

Bootstrap Image Preview