Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘হাসপাতালের বেডে শুইয়া আছি, বারোটা নল লাগানো, মেশিন দিয়া শ্বাস নিতাছি’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৫০ PM
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৫০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


গত মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ইস্যুতে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। এরপরই ভারত ও বাংলাদেশের প্রথম সারির কয়েকটি গণমাধ্যম ফলাও করে তার অসুস্থতার খবর প্রকাশ করেছে। মূলত এই বিষয়টি নিয়েই মুখ খুলেছেন লেখিকা।

ফের নিজের ফেসবুক পেজে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ইস্যুতে দেওয়া তার পোস্টের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তসলিমা নাসরিন।

তসলিমা নাসরিনের সেই পোস্টটি বিডিমর্নিং পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘হায় হায় মিডিয়ারে নিয়া আর পারা গেল না। আমি স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নিজের অবহেলার কথা লিখলাম কাল (মঙ্গলবার) রাইতে, আর ছাপা হইয়া গেল পত্রিকাগুলাতে, ‘গুরুতর’ অসুস্থ তসলিমা, মারাত্মক ৩ রোগে আক্রান্ত তসলিমা, ফুসফুস কিডনি লিভারের সর্বনাশা রোগে আক্রান্ত তসলিমা।' এই সব ভয়াবহ হেডলাইন দেইখা আমার শরীর কাঁপতাছে ডরে।

অসুখ বিসুখ তো কিছু না কিছু আছেই। কিন্তু গুরুতর তো না। খবর শুইনা মনে হইতাছে আমি হাসপাতালের বেডে চিৎ হইয়া শুইয়া রইছি। অচেতন। নাকে মুখে দশ বারোটা নল লাগানো, মেশিন দিয়া শ্বাস নিতাছি।

এখন একটাই মুশকিল, জিহাদিরা যদি আমারে খুন করে, তাইলে মাইনষে কইব,'জিহাদিরা ওরে খুন করে নাই, ও তো গুরুতর অসুস্থ ছিল, লিভার কিডনি ফুসফুস পইচ্যা গেছিল, তাই মরছে'। আমি যে জিহাদিদের হাতে মইরা শহিদ হমু, সেই শহিদ হওয়া থেইকাও ওরা আমারে বঞ্চিত করার প্ল্যান করতাছে।’

এর আগে মঙ্গলবার ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে নির্বাসিত ওই লেখিকা লেখেন, ‘অদ্ভুত আমি। কোনও কিছু নিয়ে পাগল হই, দুদিন পর ভুলে যাই। ফুসফুসে কী সব ধরা পড়ছে, দৌঁড়োদৌঁড়ি ডাক্তারের কাছে, একজন নয়, দু’তিনজন স্পেশালিস্টের সঙ্গে মিটিং করা হয়ে গেল। এরপর কী জানি কী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম, ফুসফুস নিয়ে যে কিছু একটা করতে হবে ভুলেই গেলাম।

লিভার কিডনি নিয়েও একই ঘটনা। লিভারে ফ্যাট জমতে জমতে সর্বনাশ হচ্ছে। এ দেশি স্পেশালিস্ট, ও দেশি স্পেশালিস্ট করছি। চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। ডাক্তার উপদেশ দিচ্ছেন। খুব মন দিয়ে শুনছি। তারপর মনে নেই ঘুরতে চলে গেলাম, নাকি কিছু লিখতে বা পড়তে শুরু করলাম। লিভার মাথা থেকে চলে গেল। দু তিন বছর আর লিভারের কথা মনেও পড়লো না।

সেদিন কিডনি নিয়েও টেনশনে মরে যাই মরে যাই অবস্থা। সাতদিনে সাতটা ডাক্তার দেখিয়ে ফেললাম। ডাক্তাররা প্রচুর টেস্ট দিয়েছেন করতে। আজ করব কাল করব করতে করতে একসময় ভুলেই গেলাম। এও বছর পার হবে মনে হচ্ছে। দুম করে কবে যে একদিন মরে যাব। দুদিনের জীবন, রোগ শোকের কথা ভুলে থাকাই হয়তো ভালো। উপসর্গ না থাকলে এই সুবিধা। দিব্যি বছরের পর বছর অসুখ বিসুখের কথা না ভেবেই কাটিয়ে দেওয়া যায়।’

Bootstrap Image Preview