নুসরাত জাহান রাফি হত্যার বিচারের দাবীতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করতে চাইলে অনুমতি দেননি ফেনীর সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগম। সেইসঙ্গে ঘটনার জন্য নুসরাতকেই দায়ী করে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের ছাত্রী তাহমিনা রুমি ও স্নিগ্ধা জাহান রিতা’র ফেসবুক টাইমলাইন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ফেসবুকে তারা লিখেছেন- ‘আজ নুসরাত হত্যার বিচার দাবিতে ফেনী সরকারী জিয়া মহিলা কলেজ এর ব্যানারে আমরা একটা মানববন্ধন করতে আমাদের কলেজ এর অধ্যক্ষ তাহমিনা বেগম ম্যাডাম এর কাছে অনুমানিক সকাল ৯টায় অনুমতি নেওয়ার জন্য গেছিলাম।
তারপর ম্যাডাম যা বললো তা শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না কেউ। ম্যাডাম বললো নুসরাতকে তার স্যার বলছিলো পরীক্ষার আগে প্রশ্ন দিবে তাই নুসরাত নিজ ইচ্ছায় স্যারের কাছে গেছিলো।
অথচ এতোদিন ধরে আমরা জেনে আসছি কলেজের পিয়নকে দিয়ে নুসরাতকে ডাকা হয়েছে। তবে কি আমরা এতোদিন ভুল জানতাম? আমাদের কাছে ভুল তথ্য দিয়েছে মিডিয়া? এসকল প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছা হয়। কে দিবে এই উত্তর? কোথায় পাবো সে উত্তর?
ম্যাডাম আরো বলেছিলো অতীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটে নাই। বর্তমানে ঘটতেছে, কারণ বর্তমান মেয়েরা অনেক লোভী। নুসরাত মেয়েটা ধোয়া তুলসী পাতা না। মেয়েটার সাথে যেটা হয়েছে তার জন্য মেয়েটাই দায়ী। এটার জন্য মানববন্ধন করতে আমি কখনোই অনুমতি দিবো না।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল নুসরাত পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে আগুন দেন। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ওইদিন রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।
এ ঘটনার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের পর কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন তৎকালীন সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘নাটক’ ও পরবর্তীতে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যার’ রূপ দিতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম।
দুটি ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাসহ তার সহযোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মোয়াজ্জেম। এ ধরনের অসংখ্য অভিযোগে ১০ এপ্রিল বুধবার সোনাগাজী মডেল থানা থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।