গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার স্থাপনের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অনেক যানবাহনের মালিক বা চালক এসব সিলিন্ডার পুনর্নিরীক্ষা করে এগুলো নিরাপদ অবস্থায় আছে কি-না এবং বদলানো প্রয়োজন কি-না, তা নিশ্চিত হননি। ফলে অনেক ক্ষেত্রে এসব গ্যাস সিলিন্ডার ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে উঠে।
এ বিষয়ে নাভানা সিএনজি লিমিটেডের রি-টেস্টিং বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (বিপণন) কামরুজ্জামান গাড়ির সিলিন্ডারটি ঝুঁকিপূর্ণ কি না তা ঝাচাইয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
ছাড়পত্র নিতে হবে
একজন গাড়ির মালিক যেখানেই তার গাড়িকে সিএনজিতে রূপান্তর করান না কেন, এর আগে অবশ্যই সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেই সিলিন্ডার–সংক্রান্ত ছাড়পত্র সংগ্রহ করবেন। এ ছাড়া রূপান্তরকারী প্রতিষ্ঠান সিলিন্ডারের ওপর আরও একটি ছাড়পত্র প্রদান করেন। এই ছাড়পত্রগুলো থাকলে গ্রাহক সিলিন্ডারের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারে।
সিলিন্ডারের যন্ত্রাংশ মানসম্পন্ন কি না
সিলিন্ডারের সঙ্গে থাকা যন্ত্রাংশগুলো উন্নত মানের কি না খোঁজ নিতে হবে। ইন্টারনেটের যুগে সহজেই সিএনজি রূপান্তরের যন্ত্রাংশগুলো সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায়। একটি সিলিন্ডার সিএনজি রূপান্তরের জন্য উপযোগী এবং টেকসই কি না, গ্রাহকের বোঝার উপায় কী? এ প্রসঙ্গে কামরুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক গ্যাস সিলিন্ডার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সিলিন্ডারে মান নির্ধারণ করতে ৫-৬ ক্যাটাগরির মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেন। এই মানদণ্ডের পরীক্ষায় যে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো উত্তীর্ণ হয়, সেগুলো নির্দ্বিধায় ১৫ থেকে ২০ বছর ব্যবহার করা যায়।
পাঁচ বছর পরপর পুনর্নিরীক্ষণ
গাড়িতে সিলিন্ডার বসানোর পর বাড়তি কোনো যত্ন নিতে হয় না। তবে দাহ্য পদার্থ বা স্ফুলিঙ্গ তৈরি করতে পারে, এমন পদার্থ থেকে গাড়ি বা সিলিন্ডারের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। শতভাগ নিরাপদ ব্যবহারের জন্য প্রতি পাঁচ বছর পরপর সিলিন্ডারের পুনর্নিরীক্ষণ (রি-টেস্টিং) করা জরুরি। এতে গাড়ির সিএনজি পরিচালন প্রক্রিয়ার ত্রুটি, সিলিন্ডার গ্যাসের অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়।
যেখানে হয় রি–টেস্টিং
নাভানা, ইন্ট্রাকোসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিএনজি সিলিন্ডার রি–টেস্টিং পরীক্ষণ করে থাকে। দিনব্যাপী এই পুনর্নিরীক্ষণ করতে ক্ষেত্রভেদে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হয়। সিএনজি রূপান্তরের ব্যাপারে গ্রাহকদের যে আগ্রহ লক্ষ করা যায় সিএনজি সিলিন্ডার পুনর্নিরীক্ষণে গ্রাহকদের মধ্যে অতটা সচেতনতা নেই। গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য নাভানা সিএনজি লিমিটেড ডেটাবেইস অনুসারে নিয়মিত গ্রাহকদের রি–টেস্টিংয়ের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেন। ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামে সিএনজি সিলিন্ডার পুনর্নিরীক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ থাকা উচিত
আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কোরিয়া, জার্মানি, ইতালি এবং ভারতের সিএনজি সিলিন্ডারগুলো মানসম্মত হয়। খাবার বা ওষুধের গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণের যে স্টিকার লাগানো থাকে, প্রতিটি গ্যাস সিলিন্ডারেও সে ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ এবং পুনর্নিরীক্ষণের সময় উল্লেখ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন কয়েকজন সিএনজি গাড়ি ব্যবহারকারী।