Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিগারেট খাওয়ায় ১১ ছাত্রের হাত-পা-মুখ বেঁধে পেটালো শিক্ষক!

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১০:০২ PM
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১০:০২ PM

bdmorning Image Preview


টাঙ্গাইলের একটি স্কুলে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার শহরের বিশ্বাস বেতকা সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ঘটনার জের ধরে ১১ ছাত্রের হাত, পা ও মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে মেঝেতে ফেলে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান তিনি। সোমবার (১৮ মার্চ) শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে আগামী বুধবার অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।

ছাত্র ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জান যায়, গত শুক্রবার রাতে সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলের নবম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রের ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে আবাসিক শিক্ষকরা ১১ ছাত্রকে ডেকে শাসিয়ে দেন এবং বিষয়টি অভিভাবকদের জানান।

এ নিয়ে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে ভাবনের ভেতরে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং ভবনে থাকা অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র থেকে কার্বনডাই অক্সাইড ছেড়ে দেয়। এতে আবাসিক শিক্ষকের কক্ষে ধোঁয়া প্রবেশ করলে তিনি ভয় পেয়ে অন্য শিক্ষকদের ডাকেন। পরে তারা ১১ ছাত্রকে ডেকে তাদের হাত, পা ও মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে মেঝেতে ফেলে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান। পরদিন শনিবার সকালে অভিভাবকদের খবর দিলে তারা ছাত্রদের নিয়ে যান।

শনিবার রাতেই আবাসিকের ছাত্ররা আবার ক্ষিপ্ত হয়ে ভবনের নিচতলা থেকে শুরু করে চারতলা পর্যন্ত ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। অফিস কক্ষ, লিফট, চেয়ার, টেবিল, খাট, ফ্যান, কম্পিউটার ও গ্লাসসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। এসময় ওই ভবনের আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেরে রাতেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নবম শ্রেণির ছাত্র আল আমিনের মা জলি আক্তার জানান, শনিবার সকালে এক শিক্ষকের ফোন পেয়ে তিনি আবাসিকে যান। কিন্তু তাকে তার ছেলের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। তাকে অফিস রুমে বসিয়ে রাখা হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আল আমিনকে তার কাছে আনা হয়। তখন তার পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আল আমিন জানায়, শিক্ষকরা তার দুই পা থেকে শুরু করে কোমর পর্যন্ত পিটিয়েছে এবং তাকে সারা রাত মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে।

আবাসিক ভবনের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল জোয়াহের বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, শিক্ষকরা ছাত্রদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর পর ছাত্ররা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ভাঙচুর চালায়। কেন ছাত্রদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হলো-তার বিচার চান তিনি।

আবাসিক স্কুলের অফিস এক্সিকিউটিভ ইসমাইল হোসেন জানান, গত শুক্রবার বিকেলে নবম শ্রেণির ছাত্র পারভেজ, মাজেদুর, সাগর ও রাফিসহ আরও কয়েকজন ভবনে ধূমপান করে আবাসিক শিক্ষক মিজানের কাছে ধরা পড়ে। তাদের অফিস রুমে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং অভিযুক্ত ছাত্রদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানানো হয়। এতে ওই ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মিজানের ওপর হামলা করে। পরে শনিবার সকাল থেকেই দশম শ্রেণির ছাত্র আতিকুর, সিয়াম, সাগর ও শাওনের নেতৃত্বে আবাসিক ভবনে থাকা সাড়ে তিনশ ছাত্র ভাঙচুরে অংশ নেয়।

এ বিষয়ে সৃষ্টি রেসিডেনসিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ লিয়াকত আলী লিটন বলেন, আবাসিকের কয়েকজন ছাত্র সিগারেট খাওয়ায় শিক্ষকরা তাদের একটু শাস্তি দিয়েছিলেন। এই ক্ষোভে তারা ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান বলেন, স্কুলের ছাত্ররা ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালালে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Bootstrap Image Preview