সুনামগঞ্জে নানামুখী সীমান্ত অপরাধ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে 'আলোর পথে' ফিরলেন ওরা ২৪ জন।
২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি) সুনামগঞ্জের অধিনায়কের নেয়া উদ্যাগে আলোকিত সীমান্ত কর্মসূচির আওতায় চোরাচালানসহ নানা সীমান্ত অপরাধে যুক্ত এমন ২৪ ব্যক্তিকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ লক্ষে সোমবার (১১ মার্চ) বিজিবির ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটলিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মাকসুদুল আলমের উপস্থিতিতে বিজিবির সিলেট সেক্টরের উপ-পরিচালক ও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ শহিদুল ইসলাম (পিএসসি) প্রধান অতিথি হিসাবে দোয়ারাবাজার বিজিবির বাঁশতলা বিওপিতে আলোর পথে ফিরে আসা ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারবর্গের হাতে নগদ অর্থ, রেশন সামগ্রী তুলে দেন।
এছাড়াও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এসব ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের লক্ষে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবির উদ্যোগে ট্রাষ্ট্র ব্যাংকের ঋণ সুবিধা প্রদান, বর্ডার হাটে (সীমান্ত বাজার) ব্যবসা পরিচালনার জন্য 'আলোর পথে'র সদস্যদের কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, ৩জনকে বিজিবিতে অস্থায়ী নিয়োগের আশ্বাস প্রদান করা হয়।
একইদিন ৩ জনকে চায়ের ষ্টল খোলার জন্য নগদ অর্থ প্রদান, ১৯ জনকে রেশন সামগ্রী প্রদান, ১ জনকে বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে চাকরির ব্যবস্থা ও সম্প্রতি সীমান্তের ওপারে ভারতীয় খাঁসিয়াদের গুলিতে নিহত নুরু মিয়ার পরিবারের সদস্যকে আর্থিক সহায়তা ও রেশন সামগ্রী প্রদান করা হয়।
এ উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় বিজিবি সেক্টর কমান্ডার আলোর পথে ফিরে আসা প্রত্যেককে পর্যায়ক্রমে কর্মসংস্থান তৈরি করে দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। সভায় আলোর পথে ফেরা সদস্যগণ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ইতিপূর্বে ২৮-বিজিবি সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের অঙ্গীকার অনুযায়ী আলোর পথে ফিরে আসা ১৯ ব্যক্তিকে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষে সীমান্তের বিজিবির বাঁশতলা বিওপিতে গত ৪ মার্চ থেকে ১০ পর্যন্ত এক সপ্তাহ ইলেকট্রিশিয়ান কাজের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রসঙ্গত, 'আলোকিত সীমান্ত কর্মসূচী'র আওতায় ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি) সুনামগঞ্জ কর্তৃক জেলার দোয়রাবাজারের বাঁশতলা বিওপির অধীনে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত এমন ২৪ ব্যক্তি তাদের জীবনের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আত্মসমর্পণ করে। 'আলোর পথে' অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলে ওইদিন এক অনুষ্ঠানে ২৮-বিজিবি অধিনায়ক, মেডিক্যাল অফিসার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাংবাদিকসহ অন্যান্যরা তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসার সুযোগ করে দেন এবং অধিনায়ক তাদেরকে পুনর্বাসনের আশ্বাস প্রদান করেন।