Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

কুড়িগ্রামে শিল্পকারখানা বন্ধের কারণে বাড়ছে বেকারত্ব

মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০১:৪০ PM
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০১:৫৮ PM

bdmorning Image Preview


দেশের দরিদ্র তালিকার শীর্ষে থাকা জেলা কুড়িগ্রামে শিল্পায়ন নেই বললেই চলে। কৃষিনির্ভর এই জেলায় সরকারি ও বেসরকারি দুটি স্পিনিং মিলে দেড় হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হলেও লোকসানের কারণে তাও এখন বন্ধ। ফলে বেকার হয়ে বসে আছে এসব শ্রমিক।

এদিকে উদ্যোক্তারা অবকাঠামোর অভাবে শিল্পায়ন না হওয়ায় কর্মসংস্থানের সংকট দিন দিন তীব্র রূপ নিচ্ছে। বাড়ছে দারিদ্র্যের হার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষের বাস কুড়িগ্রাম জেলায়। ১৬টি নদনদী বেষ্টিত এই জেলায় প্রতিবছর বন্যা আর নদীভাঙন বাড়িয়ে দেয় দারিদ্র্যসীমা। এ কারণে তীব্র কর্মসংকট জেঁকে বসেছে জেলার শিক্ষিত-অশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ঘাড়ে।

১৯৮৭ সালে সরকারিভাবে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মিলে কর্মসংস্থান হয় পাঁচ শতাধিক শ্রমিকের। লোকসানের কারণে ২০০২ সালে ৪৫০ জন শ্রমিককে সোনালি করমর্দনের মাধ্যমে পাওনা পরিশোধ করে বিদায় দেওয়া হয়। পরে বেসরকারি সার্ভিস চার্জ পার্টির মাধ্যমে মিলটি চালু রাখার চেষ্টা করা হয়। কম বেশি ৬০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থানও হয় নতুন করে। কিন্তু লোকসানের ধকল সইতে না পারায় ২০১১ সালে মিলটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে মিলের গেটে ঝুলছে তালা। যন্ত্রপাতিতে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মিলের নানা ধরনের ব্যয় নির্বাহের জন্য কোয়ার্টার ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলের প্রধান নির্বাহী শামসুল আলম শেখ জানান, মিলটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে আবার চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিটিএমসির আওতাধীন দু'টি বন্ধ মিল এরইমধ্যে এভাবে চালুও করা হয়েছে।

বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত কুড়িগ্রাম-রংপুর সড়কের পাশে স্থাপিত কুড়িগ্রাম স্পিনিং মিলটিও একই কারণে বন্ধ ৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে। ২০০৩ সালে মিলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার ৫ শতাধিক হতদরিদ্র নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়। কিন্তু প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ২০১৮ সালের মে মাসে বন্ধ হয়ে যায় মিলটি।

মিলের নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা কামাল, আশরাফ হোসেন ও আব্দুস ছোবহান জানান, ৯ মাস ধরে তাঁরা কোনো বেতন পাচ্ছেন না।

মিলের বেকার শ্রমিক কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা রোজিনা খাতুন জানান, মিলটিতে কাজের সুযোগ হওয়ায় তাঁরা কোনোমতে জীবন ধারণ করছিলেন। এখন মিলটি বন্ধ হওয়ার পর তাঁরা কোনো কাজ পাচ্ছেন না।

কুড়িগ্রাম স্পিনিং মিলের ম্যানেজার শাহীন আহমেদ বলেন, লোকসানের কারণে মিলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মিলটি চালুর ব্যাপারে মালিকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করা যায়, স্বল্প সময়ে মিলটি চালু করা যাবে।

কুড়িগ্রামের সুজন সভাপতি খন্দকার খায়রুল আনম বলেন, প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত যুবক জেলার অর্থনীতিতে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে। এই অবস্থা নিরসনের জন্য জেলায় শিল্পায়নের উদ্যোগ নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি জানান, ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক জনসভায় কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিলেও প্রায় সাড়ে তিন বছরে তেমন অগ্রগতি হয়নি।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, কুড়িগ্রামে একটি অথনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জমি নির্বাচন করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview