Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চলে গেলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘চুম্বন নায়ক’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:১১ AM
আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:১১ AM

bdmorning Image Preview


১৯৪৫ সালের ১৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আত্মসমর্পণ করে অক্ষশক্তির বড় মিত্র জাপান, শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে চারদিকে খুশির বার্তা। নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে হঠাৎই দেখা গেল সেই আনন্দের চিত্র। মাথায় টুপি আর গায়ে কালো পোশাক পরে দৌড়ে এলেন এক ব্যক্তি। দেখলে বেশ চেনা যায়, তিনি একজন নাবিক। আচমকা কাছাকাছি চলে এলেন এক তরুণী। পরনে সাদা অ্যাপ্রন। পেশায় নার্স। পায়ে জুতো আর লম্বা সাদা মোজা। এর পরেই সেই অমর মুহূর্ত। সাদা অ্যাপ্রন আর কালো কোট ডুবে যায় গভীর চুম্বনে। গ্রেটা ও জর্জের চুম্বনরত ছবিটি তুলেছিলেন চিত্রসাংবাদিক আলফ্রেড আইজেনস্টাট।

ঐতিহাসিক এ চুমুর সাদা-কালো ছবি পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় অমর চিত্রকথার পর্যায়ে। বহু বছর পরে মেলে সেই নাবিক আর নার্সের পরিচয়। ২০১৬ সালে ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছিলেন সেই ছবির নায়িকা গ্রেটা ফ্রিডম্যান। এবার চলে গেলেন সেই নাবিক জর্জ মেন্ডোসা। 

বিবিসি জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ৯৫ বছর বয়সে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি। তার দু’দিন পরেই (মঙ্গলবার) ছিল তার জন্মদিন। ১৯৪৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অÍসমপর্ণ করে অক্ষশক্তির প্রধান জাপান। সেই খবর পাওয়ার পরেই রাস্তায় ঢল নামে নিউ ইয়র্কবাসীর। তাদের মধ্যেই ছিলেন ২১ বছরের গ্রেটা ও মেন্ডোসাও। সেই বিজয়ের উল্লাসের মধ্যেই আচমকা দৌড়ে এসে আনন্দে আত্মহারা মেন্ডোসা চুমু খেয়েছিলেন গ্রেটার কোমর জড়িয়ে ধরে। গ্রেটা ও জর্জের চুম্বনরত ছবিটি তুলেছিলেন চিত্রসাংবাদিক আলফ্রেড আইজেনস্টাট।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পত্রিকায় ছবিটি প্রকাশিত হয়। ছবিটির কথা তখনও জানতে পারেননি গ্রেটা। প্রায় ১৫ বছর পরে ১৯৬০ সালে আলফ্রেডের একটি বইতে ছবিটি দেখেছিলেন। পরে এক সাক্ষাৎকারে গ্রেটা বলেন, ওই চুমু শুধু আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ছিল। মজার ব্যাপারটা হল, ওই সময়েই সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেন্ডোসার প্রেমিকা রিটা পেট্রিও, পেশায় তিনিও নার্স ছিলেন। পরে রিটার সঙ্গেই বিয়ে হয় জর্জের। ওই বিখ্যাত চুমু নিয়ে রীতিমতো মশকরা করতেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে রিটা বলেছিলেন, জর্জ কোনো দিনই রিটাকে ওই বিখ্যাত ‘গ্রেটা-চুমু’ উপহার দেননি।

এখন স্মৃতি হয়ে রইল শুধু টাইমস স্কোয়ারেই দাঁড়িয়ে থাকা ২৫ ফুট দীর্ঘ সেই মুহূর্তের ভাস্কর্য ‘আনকন্ডিশনাল স্যারেন্ডার’; যার অর্থ, নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ।

সে সময় টাইমস স্কয়ারে হাজির ছিলেন জর্জের প্রেমিকা রিটা পেট্রিও। পেশায় তিনিও ছিলেন নার্স। পরে রিটাকেই বিয়ে করেন জর্জ। বিখ্যাত ওই চুমু নিয়ে নাকি জর্জের সঙ্গে রীতিমতো মস্করা করতেন তিনি।

বছর তিনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন গ্রেটা। এবার তার কাছে চলে গেলেন জর্জও। পড়ে রইল সেই ছবি। রয়ে গেল নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে তাদের মূর্তি ‘আনকন্ডিশনাল সারেন্ডার’ (নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ)। আর রয়ে গেল শান্তির আন্তর্জাতিক বার্তাটুকু।

Bootstrap Image Preview