বুড়িগঙ্গা নদী উদ্ধারে পরিচালিত অভিযানে উচ্ছেদ হয়েছে দেড় হাজার স্থাপনা। তিন পর্যায়ে মোট ৯ দিনব্যাপী পরিচালিত এই অভিযানে বুড়িগঙ্গা নদীর উপকূলীয় ভূমি এবং বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল কামরাঙ্গীরচর খাল উদ্ধার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে পশ্চিম হাজারীবাগের ঝাউচর এলাকায়। তৃতীয় পর্যায়ের শেষ দিনে উচ্ছেদে পরিমাণ তুলনামূলক কম।
এদিন ছোট-বড় মিলিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে মোট ৫৯টি অবৈধ স্থাপনা। এরমধ্যে ১টি চার তলা ভবন, ২টি তিন তলা, ৮টি দোতলা, ৩টি একতলা ভবন, ২৫টি আধাপাকা স্থাপনা ও ২০ টি টংঘর উচ্ছেদ করা হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উচ্ছেদের স্বীকার হওয়া অধিকাংশ কথিত ভবন মালিক রাজউক এবং বিআইডাব্লিউটিএ’র অনুমোদন ছাড়াই নির্মান করেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে মোট জমির বাহিরেও নদীর জায়গা দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।
৩৪৬ নম্বর বাড়িটির কথিত মালিক হাজী শুকুরউল্লাহ বলেন, ‘২০০৬ সালে বাড়ি বানাইছি। রাজউকের অনুমতি নেই নাই। আমরা তো জানি না অনুমতি নেওয়া লাগে।‘ বাড়ি মালিকদের খামখেয়ালীর কারণে বিপাকে পরতে হয়েছে অনেক ভাড়াটিকাকে।‘ আউয়াল কাজির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন নবম শ্রেণীর ছাত্রী ইমু ও তার পরিবার।
ইমু বলেন, ‘আমরা খবরে উচ্ছেদের কথা শুনছি। আজ আমাদের এই দিকে উচ্ছেদ হবে বুঝে আমরা গতকাল রাতে মালামাল বের করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাড়িওয়ালা বের করতে দেয়নি।’
৩৩৬ নম্বর বাসার আরো দুই শিক্ষার্থী একই কারণে সমস্যার মুখোমুখি। চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া ইয়াসিন ও দ্বিতীয় শ্রেণী পড়ুয়া আব্দুর রহমানে বই খাতা ভবন ভাঙ্গার সময় পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। শিশু দুটির বাবা-মা ঘটনার সময় বাসায় না থাকায় ঘরের কোনো মালামাল রক্ষা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বাড়ি মালিককেই দোষারোপ করছেন বাড়িটির ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশিরা।
উচ্ছেদের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ'র নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের উচ্ছেদ অভিযান শেষ হলো। তবে চতুর্থ ধাপে আবারো বুড়িগঙ্গা নদী এবং বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)’র যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, তৃতীয় ধাপের অভিযান শেষে মোট দেড় হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। চতুর্থ ধাপে বুড়িগঙ্গা নদীর বসিলা, ওয়াসপুর অংশে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন। অভিযান পরিচালিত হবে ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।