Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পুঁজি সংকটে হুমকিতে পড়েছে উপকূলের শুঁটকি উৎপাদন

ইমরান হোসাইন, পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৩ PM
আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা। সমুদ্র-নদী থেকে আহরিত মৎস্য সম্পদে জীবিকা চলে লাখো মানুষের। লবণ চাষ, শুঁটকি উৎপাদন, কাঁকড়া চাষ, চিংড়ি চাষের সাথে বহু মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে। তবে এসবের মধ্যে দিন-দিন কমে যাচ্ছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ। এক দিকে রয়েছে পুঁজি সংকট, যার কারণে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দিতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। ফলে শুঁটকি তৈরিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট জেলে, শ্রমিকরা।

আর এভাবেই উপকূলীয় এলাকা বরগুনার পাথরঘাটায় ব্যাপক কর্মসংস্থান আর রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও দিন-দিন কমে যাচ্ছে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ। জেলার পাথরঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ পল্লী। এখানে কাঁচা মাছ কীটনাশক ছাড়াই রোদে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে তৈরি করা হয় শুঁটকি।

চলতি মৌসুমে পল্লীগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা এসব পল্লীতে প্রতিবছর বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় একশ মেট্রিক টন মাছের শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। যা দেশের চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হয় বিদেশেও। বর্ষা মৌসুমে মাছ শুকানো যায় না বলে প্রকৃতিনির্ভর এ ব্যবসা চলে কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত।

এছাড়া শুঁটকির সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের রয়েছে পুঁজি সংকট। পুঁজি বলতে তাদের রয়েছে এনজিওর লোন। এনজিওর লোন ও মহাজনদের উচ্চ সুদ দিয়ে ব্যবসা চালানো তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তারপরও সংশ্লিষ্টরা চালিয়ে যেতে চান এ ব্যবসা। দীর্ঘ দিনেও স্থায়ী শুঁটকি পল্লী গড়ে না ওঠায় হতাশা প্রকাশ করেন উপকূলীয় জেলেরা।

একই সাথে শ্রমিকদের মজুরি কম দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। ফলে দিন-দিন কমছে শুঁটকি তৈরি। তবে উপকূলে স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণ, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা এবং পুঁজি সংকটের স্থায়ী সমাধানে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে সরকারের রাজস্ব যেমনি বাড়বে তেমনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে শুঁটকির সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার পরিবারের স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে। এমনটাই মনে করেন বিশিষ্টজনরা।

পল্লীর কয়েক জন বিক্রেতা জানান, এখন ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্ষা মৌসুমে ব্যবসা তেমন ভালো চলে না। সরকার যদি স্থায়ী শুঁটকি পল্লী নির্মাণ করে তাহলে সারা বছর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। সরকারিভাবে কোন সহজ শর্তে ঋণ না পাওয়ায় প্রতি বছরই দেনা গ্রস্ত হয়ে পড়তে হচ্ছে।

শুঁটকি পল্লীর সাথে জড়িত মৎস্যজীবীরা সাহায্যের পরিবর্তে সহজ শর্তে ঋণ আশা করছে সরকারের কাছে। আর সরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে আশা তাদের। সাগর উপকূলের বিভিন্ন চরাঞ্চলের এসব শুঁটকি শিল্পকে কেন্দ্র করে যেমন টিকে থাকে দেশের সকল ফিড মিলগুলো। তেমনি টিকে থাকে বাংলাদেশের ডেইরি, পোল্ট্রি ও মৎস্য সেক্টরও। তাই শুঁটকি শিল্প বিকাশে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ  গ্রহণ করবেন এমটাই প্রত্যাশা উপকূলীয় জেলেদের।

Bootstrap Image Preview