সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের বিরুদ্ধে এবার শিশুদের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, শিশুরা ফেসবুক প্লাটফর্মে গেম খেলার সময় না বুঝেই মা-বাবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত অর্থ খরচ করলেও ব্যবস্থা নেয়া হয় না। রাজস্ব বাড়ানোর জন্য জেনেশুনে এ প্রতারণা করে আসেছে ফেসবুক। ‘সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিংয়ের কাছে পৌঁছানো কয়েক বছরের পুরনো নথিতে এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আদালতের নথি অনুযায়ী, শিশুরা ফেসবুকে গেম খেলার সময় না বুঝেই মা-বাবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বড় অংকের অর্থ খরচ করে ফেলে আর এ বিষয়ে জেনেও চুপ থাকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
২০১২ সালে এমন একটি অভিযোগে ফেসবুকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ফেসবুকের এমন নিশ্চুপ থাকাকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতারণা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও নথির তথ্য অনুযায়ী, যেসব শিশু অত্যধিক ব্যয় করছে, ফেসবুকের কর্মকর্তারা তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আলোচনায় বসেন। একাধিকবার আলোচনায় বসেও অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তারা।
জানা যায়, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের প্লাটফর্মে তৃতীয় পক্ষের বিভিন্ন গেমের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আসছে। এসব বিজ্ঞাপনের সঙ্গেই দেয়া থাকে গেমের অনলাইন লিংক।
সাধারণত কম বয়সী শিশুরা ফেসবুকে গেম খেলে সময় কাটায়। পেইড গেম খেলার সময় না বুঝেই অনেকে মা-বাবার ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ খরচ করে। বিভিন্ন অনলাইন গেম খেলতে আনুষঙ্গিক কিছু সরঞ্জাম কিনতেও অর্থ ব্যয় করতে হয়। এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব কমে যাবে বলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিষয়টি এড়িয়ে যায় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিবৃতিতে শুক্রবার ফেসবুক জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবসা নীতি নিয়মিত পর্যালোচনা করে। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতারণার অভিযোগ নিষ্পত্তিতে নীতিমালা পরিবর্তনে সম্মত হয়ে অর্থ ফেরত দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল।
পাশাপাশি যেসব শিশু ফেসবুকে গেম খেলার সময় মাত্রাতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছে, তাদের অভিভাবকদের ক্ষতিপূরণ দিতে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর আগে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য কেলেঙ্কারি প্রকাশের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল ফেসবুক। ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার একটি অ্যাপ নিজেদের সাইটে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল ফেসবুক।
ওই অ্যাপের মাধ্যমে প্রায় নয় কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নেয় ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। বিপুলসংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর এসব তথ্য গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প শিবিরের পক্ষে ব্যবহার করা হয়।
একাধিক তথ্য কেলেঙ্কারি প্রকাশ পাওয়ায় গত বছর পুরোটাই ক্ষমা চেয়ে কাটিয়েছেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ।