Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হামলার ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছে না পারমল্লিকপুর গ্রামের ২শ' পরিবার 

শরিফুল ইসলাম, নড়াইল প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:২৫ PM
আপডেট: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:২৫ PM

bdmorning Image Preview


গ্রাম্য কোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পার-মল্লিকপুর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বাড়ি যেতে পারছেন না। ভুক্তভোগী এসব পরিবারের সদস্যরা আত্মীয় স্বজন বাড়ি ও বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন।

গতকাল শনিবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে গিয়ে দেখা গেছে, পারমল্লিকপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হেমায়েত হোসেন হিমু ও উজ্জ্বল ঠাকুর গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৮ বছরের ২১ এপ্রিল  সংঘর্ষে উজ্জ্বল ঠাকুর গ্রামের সমর্থক খায়ের মৃধা  নিহত হন। খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উজ্জ্বল ঠাকুরের লোকজন আসামি পক্ষ হেমায়েত হোসেন হিমু গ্রামের লোকজনের ওপর অত্যাচার শুরু হয়। হিমু পক্ষের সমর্থকদের অন্তত ২শ' বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। খুলে নেয়া হয়েছে জানালা, দরজা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র। 

ক্ষতিগ্রস্থপক্ষের মাতুব্বার হেমায়েত হোসেন হিমু জানান, তাদের পক্ষের মজিবর মৃধা, তজিবর মৃধা, নূর ইসলাম মৃধা, রাসেল মৃধা, মুক্তার মৃধা, নাইম মুসল্লী, ইকবাল মৃধা, হুমায়ুন মৃধা, কায়েম মৃধা, ওলিয়ার শেখ, খোকন মুসল্লী, তবিবর মোল্যা ১৮টি পরিবারের পাঁকা ভবন গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া বাদশা মৃধা, লুৎফর মৃধা, হোমেত মৃধা, বিপ্লব শেখ, লিটু শেখ, হেমায়েত হোসেন হিমু,  রাজা মৃধা, জামাল মোল্যা, এনায়েত মোল্যা, আমিনুর রহমান বাবলু, মজিবুর রহমান শেখ, নান্নু শেখ , শুকুর শেখ, সামাদ শেখ, হোসেন শেখ, টফি শেখ, সোহরাব শেখ, এরশাদ শেখ, নাজির মৃধা, পান্নু মৃধা, ইলিয়াস মৃধা, হাই শেখ, বালাম শেখ, সাহিদ কাজী, ওলিয়ার রহমান কাজী, আকরাম মুন্সী, রিজ্জাক মুন্সী, হাসান বিশ্বাস, রেজসা বিশ্বাস, জলিল শেখ, কাফী মৃধা, মফিজ মৃধা, ইকরাম মৃধা, খোকন মুসল্লী, আব্দুল্লাহ সরদার, আকরাম সরদার, লাহু মুন্সী,  আনোয়ার গাজী, দবির উদ্দিন শেখ, কামাল মোল্যা, আছলাম মোল্যা, ইউনুছ কাজী, হামিম কাজী, রাজা মিয়া, হিরু শেখ, হাসান শেখ, সুমন শেখ, রবিন শেখ, ছিকুল মোল্যা সহ অন্তত ৭টি আধা পাঁকা বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ মোঃ ওহিদুজ্জামান  জানান, খায়ের মৃধা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে শিশু থেকে বৃদ্ধরা পর্যন্ত গ্রাম ছেড়ে আত্মীয় স্বজন বাড়ি ও শহর বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ নষ্ট করেছে। অনেকের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে। আর্থিক অস্বচ্ছলায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

তবে এ ব্যাপারে অপরপক্ষের মাতুব্বার অভিযুক্ত উজ্জ্বল ঠাকুর বলেন, ‘২০১৬ সালে হেমায়েত হোসেন হিমু গ্রুপের নূর ইসলাম ও ইকবাল মৃধা খুন হয়। তখন আমাদের পক্ষের বাড়িঘর ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিলো। এবার আমাদের পক্ষের খায়ের মৃধা মার্ডার হওয়ার পর আমাদের লোকজন ওদের কিছু বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। উভয়পক্ষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে সে জন্য জানুয়ারি লোহাগড়ার থানার ওসি সাহেব আমাদের ডেকেছিল। আশা করা যায় ঝামেলা মিটে যাবে’।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে দুপক্ষকে ডেকে মিলেমিশে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আ্শা করি খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 

Bootstrap Image Preview