Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৩ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চট্টগ্রামে শ্বাসকষ্ট সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: 
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:০৭ PM
আপডেট: ১৩ জানুয়ারী ২০১৯, ০২:০৭ PM

bdmorning Image Preview


চট্টগ্রাম নগরীর ও জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঠান্ডা জনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। পৌষ মাসের শেষ দিকে এসে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুদের শ্বাস তন্ত্রের বিভিন্ন রোগ। গত কয়েকদিন ধরে এসব রোগে আক্রান্ত শিশু কিশোর ও বৃদ্ধরা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে এস ভীড় করছে। নগরীর হাসপাতাল গুলোতে বেড়েছে শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। নগর ছাড়াও আশপাশের এলাকায় এ ধরনের রোগীর প্রাদূর্ভাব দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালসহ নগরীর বেসরকারী হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোতে কয়েকদিন ধরে শ্বাস কস্টে ভোগা শিশু রোগীর চাপ বাড়ছে। বেশিরভাগ শিশু ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে আক্রান্ত। এ ছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীও ভর্তি হচ্ছে।

চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে শতাদিকের কিছু বেশী। কিন্তু গতকাল বিকাল পর্যন্ত দেখা গেছে ওয়ার্ডটিতে সাড়ে ৪শ’ জনের বেশি রোগী ভর্তি আছে। ফলে ওই ওয়ার্ডে এক শয্যায় একাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। 

এ ছাড়া মেঝেতে চলছে অনেকের চিকিৎসা। আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি।

গত ৫ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে দুই বছর বয়সী শিশু রাইদা। শুক্রবার রাতে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাইদার মা জিন্নাত বেগম বলেন, স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে একদিন ওষুধ সেবন করিয়েছি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এখানে নিয়ে এসেছি।

আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে একই অবস্থা। শিশু ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। শয্যা না থাকাতে অনেকে ভর্তি হতে না পেরে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

চিকিৎসকরা বলেন, নবজাতক ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে আক্রান্তদের সেরে উঠতে সময় লাগছে, তাই বিপাকে পড়েছেন অভিভাবক ও চিকিৎসকরা। শিশুদের পাশাপাশি বৃদ্ধ রোগীরা ও চিকিৎসা নিতে আসছে হাসপাতালে। শীত মৌসুমে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এ রোগ বাড়ছে বলে তারা জানান।

চিকিৎসকরা আরো বলেন, ভাইরাসজনিত এসব রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ঠিকমতো কাজ করছে না। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ চিকিৎসায় বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

চমেক হাসপাতাল শিশু বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, শ্বাসতন্ত্রের রোগের মধ্যে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয় নিউমোনিয়ায়। এ রোগ সারতে অ্যামোক্সিসিলিন, কোট্রিমোক্সাজোল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, সেফট্রায়াক্সোনসহ একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় রোগীদের। কিন্তু নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় এসব অ্যান্টিবায়োটিক শতভাগ কাজ করছে না। ফলে রোগ সেরে উঠতে সময় লাগছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীর সুস্থ হতে ৩ থেকে ৮ দিন সময় লাগে। দ্রুত সেরে ওঠার জন্য আক্রান্তকালীন সময়ে শিশুকে ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। সবসময় গরম কাপড় পরিধান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। নবজাতকদের ঘন ঘন বুকের দুধ দিতে হবে। ডায়রিয়া আক্রান্তকে খাবারের পাশাপাশি স্যালাইন পান করাতে হবে। এছাড়া খাবার গ্রহণের আগে হাত ধোয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি খাবার তৈরির ২ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়াতে হবে।

Bootstrap Image Preview