Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সিরাজদিখানে দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে মধু চাষে

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৫ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১০ PM
আপডেট: ০৫ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১০ PM

bdmorning Image Preview


সিরাজদিখানে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে মধু চাষে এই অঞ্চলের কৃষকদের। উপজেলার মাঠের পর মাঠ সরিষার ফুলের হলুদ রঙ অববাহিকার প্রকৃতি যেন হলুদ শাড়ি পরিধান করেছে। আর মৌমাছির ভন ভন শব্দে যেন সুর তুলেছে। সরিষা ফুলের মধুর চাহিদা প্রচুর রয়েছে। প্রতিবছর এ মৌসুমে সিরাজদিখান ও শ্রীনগরে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে দেখা যায় মধু চাষিদের।

এখানে থেকে ৩ মাস পর্যন্ত মধু সংগ্রহ করে থাকে। উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নেই প্রায় ২০০ টি মৌমাছির বাক্স রয়েছে। সপ্তাহে একবার বাক্সগুলো খুলতে হয় মধু সংগ্রহের জন্য। 

মৌ চাষি মো.আলম বলেন, সিরাজদিখান কৃষি অফিসের উদ্যোগে আমি আইছি। প্রতিবক্সে ৯/১০টি করে মোমের ফ্রেম রয়েছে। মোমের ফ্রেমে মাছি মধু জমা করে আর রানী মাছি ডিম দেয়। যখন ফ্রেমগুলো মধুতে ভরে যায় তখন বক্স থেকে ফ্রেমগুলো খুলে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাছিমুক্ত করা হয় এবং ড্রামের মধ্যে ঘুরাইয়া (ঘুর্ণায়মান ড্রাম) মধু পৃথক করে নেওয়া হয়। এতে প্রতিবক্স থেকে ৬/৭ লিটার মধু বের করা যায়।

খামার করতে খরচের মধ্যে একটা বক্স ৬০০ টাকা, একটা মোমের ফ্রেম ৫০০ টাকা। বক্সভর্তি মৌমাছি নারায়ণগঞ্জ থেকে কিনে আনা হয়েছে। সরিষা ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা এসব মধু ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা লিটারে বিক্রি করা যায়। ২০০ টি মৌ বক্সে এই পর্যন্ত ৮০০ কেজি (২০ মণ) মধু সংগ্রহ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২ লাখ টাকা।

এ উপজেলায় প্রায় কয়েকটি মৌ চাষির দল প্রায় দুই কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করলেও চাষির অভাবে শুধু এ উপজেলায় কোটি কোটি টাকা মধু শুকিয়ে যাচ্ছে। মধু চাষিরা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

এ বিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি অফিসার সুবোধ চন্দ্র রায় বলনে, সরিষার ফুলে মৌমাছি যে পরাগায়ন ঘটায় তাতে সরিষার দানা ভালো হয় এবং ফলনও বাড়ে। যে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি নেই সেখানে সরিষার ফলন কম হয়। সরিষা ক্ষেতে মধুর খামার গড়ে তোলার জন্য আমরা সব সময় কৃষককে উৎসাহ দেই। এর ফলে কৃষক দু'দিক থেকে লাভবান হয়। একদিকে সরিষা থেকে যে মধু পাওয়া যাবে তা বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়, অন্যদিকে সরিষার ফলন ভাল হয়।

এ বছর উপজেলায় মধুর ২০০ টি মৌ বক্স রয়েছে। সরিষা ক্ষেতে মধু চাষ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দিতে হলে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, পুঁজির যোগান, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মধু বিপণনের ব্যবস্থা করতে হবে। মূলত পৃষ্ঠপোষকের অভাবে সরিষা ক্ষেতে মধুর খামার করতে পারছে না কৃষক। তাছাড়া ওই খামার যে ব্যাপক লাভজনক সেটাও জানে না অনেক কৃষক।

হাজার হাজার মৌমাছি হলুদ রঙের সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বক্সে জমা করছে। ৭/৮ দিন পর পর ওই সব বক্স থেকে বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতি বক্সে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মৌমাছি আর একটি মাত্র রানী মৌমাছি থাকে। রানী মৌমাছি ডিম দেয়। মৌমাছির নাম 'এফিস মিলি ফেরা' জাতের মাছি। সারাদিন মাছিগুলো সরিষার ফুলে পরাগায়ন ঘটায় এবং মধু সংগ্রহ করে। এতে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করে মাছিগুলো। ফুলের ওপর নির্ভর করে মধুর ভিন্নতা। সরিষার ফুল থেকে যে মধু পাওয়া যায় তার দাম একটু কম। সুন্দরবনের মধুর দাম একটু বেশি।  
 

Bootstrap Image Preview