Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাঁদপুরে সংঘর্ষে আহত ৪০, দীপু মনি ও শেখ মানিকের বাড়িতে হামলার অভিযোগ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৯ PM
আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


চাঁদপুর-৩ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ও জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যা সেলিমকে আটকের জের ধরে চাঁদপুর শহরে আ’লীগ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে দুই দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এ সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দলের ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে চাঁদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. দীপু মনি ও বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটে। পরে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে শহরের জে এম সেনগুপ্ত রোডস্থ ধানের শীষের প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবনের সামনে থেকে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

পরে আটকের প্রতিবাদে প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদও পুলিশের গাড়িতে উঠে যান এবং স্বেচ্ছায় থানায় যেয়ে অবস্থান নেন। এই খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি’র শত শত নেতাকর্মী চাঁদপুর সদর মডেল থানায় প্রবেশের মুখ বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত তারা থানার প্রবেশ মুখে অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে ধানের শীষের প্রার্থীর অনুরোধে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল করে তার বাসার দিকে যেতে থাকে। মানিকের বাসার দিকে যাওয়ার সময় জে এম সেনগুপ্ত রোডে হঠাৎ করে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে লক্ষ্য করে মুহুর্মূহু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়।

এ সময় বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ বাড়ির গেট ভাঙচুর করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আর ডা. দীপু মনির বাড়িতে হামলার অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান নিয়েছে। অ্যাডভোকেট সলিমুল্লা সলিমকে কেন আটক করা হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে থানায় একটি নিয়মিত মামলা রয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয় সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘আমরা সবাই ডা. দীপু মনির বাসায় নির্বাচনি কাজ করছিলাম। হঠাৎ বাসাকে লক্ষ্য করে অসংখ্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে বাইরে গিয়ে দেখি বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর বাড়ির সামনে থাকা জটলা থেকে একেবারে পরিকল্পিতভাবে তাদের অনেক সংখ্যক লোক চারদিক থেকে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আমাদের প্রায় ১০ জন লোকের মাথা ফেটে যায়। এ অবস্থার খবর পেয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা এসে সঙ্ঘবদ্ধভাবে তাদের পাল্টা ধাওয়া করলে তারা বিএনপি প্রার্থীর বাসায় ঢুকে যায়। পুলিশ অনেক পরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। কারণ, আমরা আমাদের ফলাফলের বিষয়ে নিশ্চিত। তাই নির্বাচনের এই আগ মুহূর্তে এসে আমরা কোনোভাবেই সংঘাতে জড়াতে চাই না। বিএনপি প্রার্থীর নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচনের আগে একটা বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছি। তখন আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো না।’

জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহজালাল মিশন বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমরা গণসংযোগে নামার সময় আমাদের নেতা অ্যাড. সলিম উল্যা সেলিমক থানা নিয়ে যায়। কেন তাকে আটক করা হচ্ছে এ বিষয় জানতে বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক থানায় যান। এ সময় তার সঙ্গে কিছু নেতাকর্মীও যায়। পরবর্তীতে থানা থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে বিএনপি প্রার্থীর বাসার দিকে আসছি। এ সময় বিএনপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ভাইয়ের বাসা থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরে অবস্থিত মাননীয় সংসদ সদস্য দীপু আপার বাসা। সেখান থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা বিএনপি প্রার্থীর বাসায়ও হামলা চালায়। গেট ভাঙচুর করে।’

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাছিম উদ্দিন জানান, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এখনও কেউ কোনও অভিযোগ করেনি, তাই মামলাও হয়নি।’

Bootstrap Image Preview